প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রেসকার্ড নিউজ: প্রাচীনকাল থেকেই পানপাতার গুরুত্ব অপরিসীম। পূজা-পার্বণ থেকে শুরু করে আজকের অনুষ্ঠান বাড়ি, বাঙালি রীতিনীতির পরতে পরতে জুড়ে রয়েছে পানপাতা।
শাস্ত্র মতে ব্রহ্মা তুষ্ট সুপারিতে, বিষ্ণু তুষ্ট পানে আর মহাদেব তুষ্ট চুনে। অর্থাৎ পানের খিলিতেই বাস করেন এই ত্রিদেব। তাই পানের গুরুত্ব অপরিসীম।
পান শুধু তৃপ্তিই দেয় না, এটি স্বাস্থ্যের পক্ষেও খুব উপকারী। মশলা,সুপারি, জর্দা দিয়ে খাওয়ার মধ্যেই পান পাতার উপকারিতা শেষ নয়। এতে আছে বিভিন্ন ঔষধিগুণও।
এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও মাউথ ফ্রেশনারও। এখন দেখে নেওয়া যাক পানের উপকারিতা।
পানপাতায় যে রস থাকে তা দাঁত ও মাড়ি সুস্থ রাখে। এটি মুখের ভিতর পরিষ্কার রাখে ও মুখের রক্তপাত বন্ধ করে।
পানপাতার রস এক কাপ হাল্কা গরম জলে মিশিয়ে রোজ সকালে গার্গল করুন, কয়েকদিনের মধ্যে তফাৎ দেখতে পাবেন।
নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ করতে পানপাতা মহৌষধি হিসাবে কাজ করে। এটি খুব তাড়াতাড়ি রক্তকে জমাট বাঁধায়।
কানে ব্যথা হলে কয়েক ফোঁটা পানের রস নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে কানের মধ্যে দিলে ব্যথা কমে যায়।
ছোটোখাটো কাটাছেঁড়ায় পানের পাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া যাদের আর্থারাইটিস, গ্যাসট্রিক ইত্যাদি আছে তাদের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে পানপাতা।
পানপাতা ত্বকের বহুবিধ সমস্যা দূর করে। এতে আছে মাইক্রোবিয়াল প্রপার্টি, যা ব্রণ, ফুসকুড়ি, অ্যালার্জি, কালো ছোপ, অ্যাকনে, সান বার্ন সারিয়ে তোলে। এরজন্য কয়েকটা তাজা পান আর কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে লাগাতে হবে।
শরীরের কোনও জায়গায় ফাংগাস ইনফেকশন হলে পানপাতার রস লাগালে তা কয়েকদিনের মধ্যে সেরে যায়।
পানপাতা হজমের সমস্যা, গ্যাস ও অম্বল দূর করে। এছাড়া যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্যও এটি খুব উপকারী। পেট খারাপ বা পেটে ব্যথা হলে পান পাতার রস বা গোটা চিবিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
নিয়মিত পান খেলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে। এর ফলে ব্লাড সার্কুলেশন বেড়ে যায়, যা বিভিন্ন প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল অ্যাবজর্ব করতে সাহায্য করে।
সর্দি-কাশি হলে গরম জল পানপাতা ও এলাচ দিয়ে ফুটিয়ে পান করলে দ্রুত আরাম পাওয়া যায়।
তবে এইসব উপকার পেতে গেলে খাওয়ার পরে পান খাবেন। কখনও খালিপেটে পান খাবেন না। এছাড়া জর্দা, সুপারি, খয়ের ও চুন ছাড়া পান খাবেন।
শখের বা নেশার জন্য হলেও বেশী পান কখনোই খাবেন না। পান উষ্ণ ও পিত্ত কারক, তাই শিশু ও অন্ত:স্বত্ত্বা মহিলাদের পান খাওয়া উচিৎ নয়।
No comments:
Post a Comment