ইউক্রেন ও রাশিয়ার বিরোধ বিশ্বকে আতঙ্কে রেখেছে। আমেরিকা ও ন্যাটো দেশসহ ইউরোপের সব দেশই রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরোধিতা করছে। এ ছাড়া ভারত ও চীনের মতো দেশগুলো অত্যন্ত কূটনৈতিক সতর্কতার সঙ্গেই বলছে, আলোচনার মাধ্যমে বিরোধের সমাধান করতে হবে। এসব বক্তব্যে স্পষ্ট যে চীন ছাড়াও ভারতও এই বিরোধে সরাসরি কিছু বলা এড়িয়ে যাচ্ছে। আসলে এই ইস্যুটি ভারতকে কূটনৈতিকভাবে কঠিন অবস্থানে ফেলেছে। ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত রাশিয়ার সঙ্গে তার কয়েক দশকের পুরনো সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না।
একইসঙ্গে এমন সংকট রয়েছে যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ হলে ভারতকে সমর্থন দেওয়ার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের চাপ থাকবে। এই পরিস্থিতি ভারতের জন্য উদ্বেগজনক হবে। একদিকে রাশিয়ার আগ্রাসী পদক্ষেপকে সমর্থনও করতে পারে না অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গিয়ে মার্কিন জোটের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চায় না। রাশিয়ার সাথে ভারতের বন্ধুত্ব শীতল যুদ্ধের যুগে নেমে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আধিকারিকরা বলেন যে রাশিয়া একটি নির্ভরযোগ্য এবং পরীক্ষিত অংশীদার।
বিদেশ নীতি বিশেষজ্ঞরা, গত বছর করোনা সংকটের কথা উল্লেখ করে বলেন যে মহামারীর কারণে যখন ভারতের অবস্থা খারাপ, তখন রাশিয়া আমেরিকার সামনে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছিল। এমনকি 2014 সালে যখন রাশিয়া ক্রিমিয়াকে অধিভুক্ত করে তখনও ভারত কোনও পক্ষ নেয়নি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পেশ করা রেজুলেশনে ভোট দেওয়া থেকেও নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছিল ভারত।
অস্ত্র ক্রয়ও রাশিয়া ও ভারতের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের অন্যতম কারণ। ভারত রাশিয়ার সাথে S-400 ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে, যা এই মাসেই দেওয়া হবে। বহুমুখী বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে ভারত সবসময়ই রাশিয়ার পাশে থেকেছে। বিশেষ করে চীন ও আমেরিকার মধ্যে চলমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার সময় রাশিয়া পাশে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু ভারতকে দূরে রাখতে চায় না। এর বাইরে পাকিস্তানও রাশিয়ার কাছাকাছি যেতে চেয়েছে বহু বছর ধরে। ভারত এই বিষয়ে কথা বলতে এড়িয়ে যাওয়ার একটি কারণ এটিও।
No comments:
Post a Comment