হাওড়া: ঘটনার দিনের রাতে কোনও দুষ্কৃতী নয় বরং পুলিশ কর্মীই গিয়েছিল আনিসের বাড়িতে। আনিস মৃত্যু মামলায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা পুলিশ কর্মী ছিলেন বলেই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে দাবী করা হয়। উল্লেখ্য, পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্টে যে দাবী করা হয়েছে সেই দাবী আগেই করেছিলেন অনিসের বাবা সালেম খান এবং কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে হাওড়া আমতা থানার তিনজন পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ইতিমধ্যে। তারা হলেন, এএসআই- নির্মল দাস, কনস্টেবল-জিতেন্দ্র হেমব্রম, হোম গার্ড-কৃষ্ণনাথ বেরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করা হচ্ছে আমতা এবং বাগনান থানার পুলিশ কর্মীদের। সেদিন রাতে মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন অনুযায়ী এই দুই থানার কোন কোন আধিকারিককে ওই দিন আনিসের বাড়িতে পাওয়া যাবে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। আনিস মৃত্যু কাণ্ডের জট কাটাতে তাই এই মোবাইল লোকেশন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। না
বিশেষ তদন্তকারী টিম সোমবার রাতে আমতা থানায় আসে এবং জানা যায়, আমতা থানার আধিকারিকদের
পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় থানার ওসি কেও। পুলিশ সূত্রে খবর, বাগনান থানার পুলিশ আধিকারিকদের কেও পরবর্তীকালে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডাকা হতে পারে।
অতএব, আনিসের পরিবারের দাবী যে, তাঁদের ছেলেকে পুলিশ কর্মীরাই খুন করেছে, তাও তাদের বাড়িতে এসে, সেই অভিযোগকে কার্যত মান্যতা দিচ্ছে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তের এই রিপোর্ট। আর এই রিপোর্ট আসার পরেই জেলা পুলিশের তরফ থেকে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে, উক্ত তিন পুলিশকর্মী সাসপেন্ড করার নোটিশ জারি করেছেন জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায়।
এদিকে, আনিস হত্যাকাণ্ডে পুলিশের নাম জড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল। পাশাপাশি ঘটনার পর ৮৩ ঘণ্টা সময় লাগাটা কিন্তু যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অন্যদিকে, আনিসের বাবা এখনও পর্যন্ত সিবিআই তদন্তের ওপরেই ভরসা রাখছেন বলেই পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে।
তাঁর দাবী, ছেলের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইয়ের হাতেই তুলে দেওয়া হোক। রাজ্য পুলিশের উপর কোন ভরসা বিশ্বাস তার নেই। যদিও গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলতে নারাজ জেলা পুলিশের আধিকারিকরা। তবে পুলিশ সূত্র মারফত যতটুকু জানা যাচ্ছে এর পরে হয়ত এই সিটের নেতৃত্বে যে তদন্ত চলছে সেই তদন্তের অন্যতম অংশ হিসাবে পুলিশ কর্মীদের মোবাইলের লোকেশন চিহ্নিত করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে তদন্তের স্বার্থে।
মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ট্র্যাক করার পরেই পুলিশ নিশ্চিত চাইছে ওই দিন রাতে আনিসের বাড়িতে যে চারজন গিয়েছিল, তারা আমতা থানা নাকি বাগনান থানার। এটা নিশ্চিত হওয়ার পরেই আনিসের বাবা সালেম খানকে দিয়ে টিআই প্যারেডের ব্যবস্থা করা হবে বলে, জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। যদিও আনিসের বাবা জানান, যদি সেদিনের সেই লোকগুলোকে তাঁর সামনে দাঁড় করানো হয়, তাহলে খুব সহজেই তিনি তাদের শনাক্ত করতে পারবেন।
তবে আনিস মৃত্যু মামলার রহস্যের জট কাটাতে ভরসা এই টিআই প্যারেড মাধ্যম এবং তার আগে তাঁর বাড়িতে ওই দিন রাতে যে যে পুলিশকর্মীর টাওয়ারের লোকেশন ম্যাচ করছে সেই তথ্য।
No comments:
Post a Comment