জলপাইগুড়ি: শ্বশুর বিধায়ক ও প্রভাবশালী। শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে থানার দ্বারস্থ হয়েও লাভ হয়নি। তাই অভিযোগ নিয়ে সটান আদালতে হাজির বৌমা। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিল আদালত। ঘটনা জলপাইগুড়ি জেলার।
জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের ছেলে দিবাকর রায়ের সঙ্গে ২০১৯ সালে মার্চ মাসে ময়নাগুড়ির বাসিন্দা পিঙ্কি রায়ের বিয়ে হয়, দেখাশোনা করে। পিঙ্কির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ও শাশুড়ি তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। শ্বশুর খগেশ্বর অত্যাচার না করলেও নিশ্চুপ থেকে পরোক্ষভাবে ছেলে ও নিজের বৌকে সমর্থন করতেন বলেই অভিযোগ পিঙ্কির।
একে তো তৃণমূলের বিধায়ক, তার ওপর যথেষ্ট প্রভাবশালী, অতএব পুলিশও তার ভয়ে থরহরি কম্পা। সেজন্য স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করতে গিয়েও শূন্য হাতে ফিরতে হয় পিঙ্কিকে। এরপর পুলিশ ও শ্বশুরকে একই দড়িতে টেনে থানার দ্বারস্থ হন পিঙ্কি।
পিঙ্কি জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শাশুড়ি তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতো। পিঙ্কি বলেন, 'যদিও শ্বশুর আমাকে কোনও দিন মারধর করেনি। কিন্তু আমাকে কোনও দিন সাহায্যও করেননি। উল্টে ছেলেকে সমর্থন করেছে। তিনিও সমদোষী।'
পিঙ্কি বলেন, 'থানায় গেলেও অভিযোগ জমা নেওয়া হয়নি, এমনকি পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। বাধ্য হয়ে তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।'
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বিধায়ক জানান, 'দেখাশোনা করেই ছেলের সাথে বিয়ে হয় পিঙ্কির। কিন্তু সে এই বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি চলে যায়। আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।'
পিঙ্কির রায়ের আইনজীবী সৌজিৎ সিং জানান, পিঙ্কি রায়ের অভিযোগ, শ্বশুর বাড়িতে বিয়ের পর থেকে অত্যাচারিত হয়ে আসছেন। এই কারণেই গত দেড় বছর ধরে তিনি তার শ্বশুড় বাড়ি ছেড়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। এরপর তিনি শ্বশুর ও স্বামীর বিরুদ্ধে রাজগঞ্জ থানা, এমনকি পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেও তার অভিযোগ জমা হয়নি।'
পিঙ্কি রায়ের আইনজীবী বলেন, এরপরই শুক্রবার CJM- এর সামনে সমস্ত বিষয়টি আমরা তুলে ধরি। আজ আদালত পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে এবং জুন মাসের ১২ তারিখের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে জানাতে।'
No comments:
Post a Comment