উত্তর ২৪ পরগনা: আন্তর্জাতিক হাওলা চক্রের পর্দা ফাঁস বাংলায়। আর্থিক দুর্নীতি ও অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে মাছ ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির অভিযান। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার মৃধার বাড়িতে ইডির হানা। পাশাপাশি এই ওয়ার্ডের স্বপন মিশ্রের বাড়িতেও শুক্রবার সকাল থেকেই চলছে তল্লাশি অভিযান। পাশাপাশি ব্যবসায়ীর বাইপাস ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট। একই সঙ্গে ইডিওর আরও একটি দল অশোকনগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে প্রণব হালদারের বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে। একই সঙ্গে তিন জায়গায় চলছে তল্লাশি।
সুকুমার মৃধার বিরুদ্ধে অভিযোগ, মাছ ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরে বেআইনি লেনদেন চালাচ্ছেন তিনি। এছাড়াও বেআইনি পাচার ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইডি সূত্রে খবর, হাওলার নেটওয়ার্ক মারফত কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে এই দেশে পাচার করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের তরফে ভারত সরকারকে জানানো হয়। তার পরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে ইডি।
ইডি অফিসাররা যেহেতু এই মানি লন্ডারিং অ্যাক্টে তদন্ত করেন, তাই এত বিপুল পরিমাণ অর্থ তছরূপ কীভাবে হয়েছে, সেই তদন্তের জন্যই এদিন কলকাতা শহর সহ জেলায় জেলায় তল্লাশি অভিযানে নামে ইডি। তদন্তে জানা গিয়েছে, এই গোটা ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে প্রশান্ত হালদার। তাঁর মাধ্যমেই এই আর্থিক তছরূপ বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসা হয়েছে সেই টাকা।প্রশান্ত হালদারের সঙ্গেই নাম জুড়েছে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রণব হালদার এবং আশোকনগর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের স্বপন মিশ্র ও সুকুমার মৃধার নাম।
ইডি সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রাথমিকভাবে মৃধার বেশ কয়েক কোটি টাকার বেআইনি ব্যবসা ও লেনদেনে এখন ইডির নজর রয়েছে। আরও খবর, কলকাতার একাধিক কাউন্সিলর ও উত্তর ২৪ পরগনার এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গেও তার ওঠাবসা ছিল। এমনকি ওই মাছ ব্যবসায়ী ব্যবসায়ী প্রভাবশালী মহলের অর্থ খাটত বলে ইডি সূত্রে খবর। যদিও বর্তমানে সুকুমার বাংলাদেশে রয়েছে বলেই খবর।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন থেকেই দেখা যাচ্ছে এই রাজ্যকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক হাওয়ালা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুক্রবার সকাল ছ'টা নাগাদ বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে দমদম ও উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা রাজারহাটে তল্লাশি চালাচ্ছেন ইডি আধিকারিকরা। বাইপাসের ধারে সুকুমারের একটি অফিস রয়েছে, সেখানেও চলছে তল্লাশি। কীভাবে এই টাকা আসত, তা জানার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা। মাছ ব্যবসার আড়ালে সুকুমার আরো অন্যান্য ব্যবসায় জড়িত ছিল পাশাপাশি ৫০ থেকে ৬০ টি ভুয়ো কোম্পানিও তারা খুলেছিলেন, অন্য সংস্থায় বিনিয়োগ করা হতো টাকা। সেই সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
No comments:
Post a Comment