আমাদের দেশের অধিকাংশ রাজ্যে সারা বছরই কলা উৎপাদনের চাহিদা থাকে। এ কারণেই কলা চাষও ব্যাপক হারে হয়। দেশে ৫০০ টিরও বেশি জাতের কলা জন্মে, তবে এর সর্বোত্তম ফলনের জন্য, টিস্যু কালচার কৌশলে উদ্ভিদ প্রস্তুত করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে টিস্যু কালচার কৌশলে কলা চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায় বলে বিশেষজ্ঞরা জানান, তবে এই কৌশলে চারা তৈরির সময় অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, তা না হলে লাভ, লোকসানেরও রূপ নিতে পারে।
টিস্যু কালচার কৌশল হল উদ্ভিদ তৈরির পুরো প্রক্রিয়া, যেখানে টিস্যু কালচারের কাজ করা হয়। এতে, ক্রমবর্ধমান উদ্ভিদের উপরের অংশ থেকে টিস্যুর একটি ছোট অংশ নেওয়া হয়। এই টিস্যুগুলি পুষ্টি এবং উদ্ভিদের হরমোন দিয়ে তৈরি জেলিতে রাখা হয়। এই উদ্ভিদের হরমোন এবং পুষ্টি থেকে উদ্ভিদের শিকড়ের বিকাশ ঘটে এবং পাতা তৈরি হতে শুরু করে। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার পরে, এই গাছগুলি সঠিকভাবে মাটি বা বাগানে লাগানো হয়।
এর পূর্ণ বয়স্ক গাছের কাণ্ডের পুরুত্ব ৫-৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। টিস্যু কালচার থেকে চারা তৈরি করার সময় কলা গাছ থেকে ৫-৬টি সুস্থ পাতা নেওয়া হয় এবং তাদের মধ্যে ৫ সেন্টিমিটার দূরত্বও রাখা হয়। রোপণের পরে, পাতাগুলি শক্ত হতে শুরু করলে ২৫-৩০ টি শিকড় তৈরি করা প্রয়োজন।
সহজ কৌশলে উদ্ভিদ তৈরিতে গাছপালা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও টিস্যু কালচার থেকে তৈরি গাছের সঠিক বিকাশ ঘটে। টিস্যু কালচারে যথাযথ যত্ন নিলে গাছ মরে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা থাকে না। টিস্যু কালচারড কলা গাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বেশি ফল দেয়। এ কৌশলে যেগুলো তৈরি হয় সেগুলো রোগমুক্ত এবং ফলের মানও ভালো।
এই কৌশলের সাহায্যে, ফলগুলি চাষের ৯-১০ মাসের মধ্যে পাকার জন্য প্রস্তুত হয়, তারপরে প্রতি ৮-১০ মাসে গাছে আবার ফল (কলা উৎপাদন) ভরে যায়। টিস্যু কালচার কৌশলে কলা চাষ করে দুই বছরে বাম্পার মুনাফা পাচ্ছেন কৃষকরা। এ কৌশলে চাষের জন্য নতুন ও উন্নত জাতের কলা ব্যবহার করা ভালো। এই কৌশলটি সাধারণত শোভাময় এবং ফুলের গাছের জন্য ব্যবহৃত হয়।
No comments:
Post a Comment