উত্তরবঙ্গ সফরে এলে তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় সময়ই দেখা যায় ভিন্ন মেজাজে। কখনও তিনি নিজে হাতে মোমো বানান, আবার কখনও ফুচকা বানিয়ে খাওয়ান। শুধু তাই নয়, দক্ষিণবঙ্গে গেলে আবার তিনি চা বানিয়েও পান করান। কারণ মমতা জানেন, কোথায় কী রান্না করতে হবে, আর কী খাওয়াতে হবে।
গতবার, দার্জিলিং সফরে থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোমো তৈরি করে খাওয়ান এবং এবারের সফরকালে তিনি পৌঁছে যান ফুচকার স্টলে। এখানে শুধু নিজে হাতে ফুচকা তৈরিই নয়, মানুষকে পরিবেশন করেও খাওয়ান তিনি। একই ভাবে গত বছর মেদিনীপুর সফরের সময় মমতা রাস্তার পাশের গাড়ি থামিয়ে চায়ের দোকানে ঢুকে পড়েন এবং চা বানিয়ে মানুষকে পরিবেশনও করেন। আসলে আমজনতার হৃদয়ে সরাসরি স্থান করে নিতে এটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক নিজস্ব পদ্ধতি, যা তিনি প্রায়শই পালন করেন। মমতা এটা ভালো ভাবেই জানেন দার্জিলিংয়ে মোমো আর ফুচকা খুব পছন্দ হয়।
মমতার এই কৌশল বুঝতে হলে নির্বাচনের পরিসংখ্যানও বোঝা দরকার। দার্জিলিং কখনই তৃণমূলের দুর্গ ছিল না। গত কয়েক বছর ধরে এখানে বিজেপির আধিপত্য রয়েছে। এদিকে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তার পরে লোকসভা নির্বাচন। এমন পরিস্থিতিতে উত্তরবঙ্গে দলের আধিপত্য প্রতিষ্ঠাই তৃণমূলের মূল লক্ষ্য।
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের সাতটি আসনেই জিতেছিল বিজেপি। তৃণমূলের হাত প্রায় খালিই থেকে যায়। এবারের বিধানসভা নির্বাচনেও বিজেপি উত্তরবঙ্গ থেকে অনেক আসন ছিনিয়ে নিয়েছে। এমতাবস্থায় উত্তরবঙ্গ এই সময়ে শাসক দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণেই মাসে একবার উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন মমতা। শুধু মমতাই নন, তার ভাইপো তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও উত্তরবঙ্গ সফরে রয়েছেন।
এই সব মিলিয়ে এটা স্পষ্ট যে, মমতার কাছে দার্জিলিং অনেক গুরুত্ব বহন করে। এই কারণেই মমতা বুধবার দার্জিলিংয়ে নেপালি কবি ভানু ভক্তের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নেপালি দিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন। দার্জিলিংয়ে গোর্খা সম্প্রদায়ের আধিপত্য রয়েছে এবং বেশিরভাগ মানুষ নেপালি এবং তারপর হিন্দি ব্যবহার করেন। এই কারণেই মমতা নেপালির পর হিন্দিতে বক্তৃতা দিয়ে গোর্খাদের নিয়ে কথা বলেছেন।
No comments:
Post a Comment