আজকের ব্যস্ত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে যে সব রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, তার মধ্যে অন্যতম হল হার্ট অ্যাটাক। হৃদরোগকে সাধারণত বার্ধক্যজনিত সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও গত কয়েক বছরে তরুণ-তরুণীরাও এই মারাত্মক রোগের শিকার হচ্ছেন। গত বছর অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লা, কন্নড় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা পুনীত রাজকুমারও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কিছুদিন আগে গায়ক কে কেও এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আমাদের মাঝে বেঁচে নেই।
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়?
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়। এই ধরনের বাধা সাধারণত জাহাজে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থের জমা হওয়ার কারণে হয়ে থাকে। আমরা জেনে-শুনে বা অজান্তে প্রতিদিন এমন কিছু কাজ করে থাকি, যার কারণে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়, এ বিষয়ে সবার জানা এবং প্রতিরোধ করা জরুরি। আমাদের অভ্যাসের উন্নতির মাধ্যমে আমরা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণ কমাতে পারি। নীচে তাদের সম্পর্কে জানুন.
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায় এমন অভ্যাস
১. ওজন নিয়ন্ত্রণে না রাখা
এই দৌড়াদৌড়ির জীবনে, বেশিরভাগ মানুষ স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগে থাকেন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একে হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম ঝুঁকির কারণ বলে মনে করেন। Myohealth বলে যে স্থূলতা উচ্চ রক্তের কোলেস্টেরল, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়, যা সবই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। এই কারণেই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সময়মতো ওজন কমিয়ে ফেলুন।
২. ধূমপান এবং চাপ
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা ধূমপান করেন এবং উচ্চ মানসিক চাপে থাকেন তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে। প্রকৃতপক্ষে, ধূমপান সময়ের সাথে সাথে ধমনীতে প্লাক তৈরি করে, যার ফলে ধমনী সংকুচিত হয় এবং হার্টে রক্ত প্রবাহ কমে যায়, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। একইভাবে, বেশি স্ট্রেস নেওয়ার ফলেও রক্তচাপের সমস্যা বাড়ে, যা হৃদরোগের প্রধান কারণ হিসাবে দেখা হয়। এ কারণেই মানসিক চাপ না নেওয়া এবং ধূমপান থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
৩. শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি যদি আরামদায়ক জীবন পছন্দ করেন, তাহলে এই অভ্যাস হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা হৃদরোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। কারণ শরীর যখন নিষ্ক্রিয় থাকে, তখন ধমনীতে চর্বিযুক্ত পদার্থ জমা হতে থাকে। আপনার হৃৎপিণ্ডে রক্ত বহনকারী ধমনী যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা ব্লক হয়ে যায়, তাহলে তা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। এই কারণেই সকল মানুষকে প্রতিদিন ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যোগব্যায়াম এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে হার্ট অ্যাটাক ও হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ
- বুকে তীক্ষ্ণ ব্যথা
- ঘাম
- শ্বাসকষ্ট
- বমি বমি ভাব
- মাথা ঘোরা
- হঠাৎ ক্লান্তি
- কয়েক মিনিটের জন্য বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথা, ভারী হওয়া বা সংকোচনের অনুভূতি
- হৃৎপিণ্ড থেকে কাঁধ, ঘাড়, বাহু এবং চোয়াল দীর্ঘায়িত ব্যথা
No comments:
Post a Comment