সুদূর সুইজারল্যান্ডে পাড়ি দিচ্ছেন দুই মহিলা সহ ৩ ঢাকি, খুশির হাওয়া মছলন্দপুরে

ঢাক বাজাতে সুদূর সুইজারল্যান্ডে পাড়ি দিচ্ছেন দুই মহিলা ঢাকি সহ ৩ জন। খুশির হাওয়া মছলন্দপুরে।মছলন্দপুর থেকে রুমা দালাল বিশ্বাস, দেপালী দাস ও তাঁর স্বামী সন্তোষ দাস পাড়ি দেবে সুইজারল্যান্ড। সেখানকার পরিবেশ ঢাকের বাদ্যিতে মুখরিত করবেন তারা।

ইউনেস্কোর তরফে দুর্গা পুজোকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে কয়েকদিন আগেই। তাই এই দেশ তো বটেই প্রবাসী বাঙ্গালীদের জন্যও এবারের দুর্গা পুজো ঘিরে রয়েছে বাড়তি উন্মাদনা। আর দুর্গা পূজা মানেই ঢাকের বাদ্যি চাই-ই চাই। কয়েক বছর ধরে পুরুষ ঢাকিদের পাশাপাশি যথেষ্ট চাহিদা বেড়েছে মহিলা ঢাকিদেরও।

মাঝে দু'বছর করোনা কাঁটায় ঢাকিদের অবস্থা অনেকটাই খারাপ ছিল, তবে এবার খারাপ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আশার আলো দেখতে শুরু করেছেন ঢাকিরা। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই রাজ্য ও ভিন রাজ্য থেকে ঢাকিদের আগাম বায়না আসতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, মছলন্দপুর থেকে সুদূর সুইজারল্যান্ডের পুজোতেও ঢাক বাজানোর জন্য ডাক পড়েছে ঢাকিদের। আর তাই খুশির হাওয়া মছলন্দপুরে।  

বর্তমান রাজ্য সরকারের তরফে বেশ কিছু পুরুষ ও মহিলা ঢাকিকে সরকারি ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সরকারের তরফে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তাদের ঢাক বাজাতে ডাক পড়ছে। উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের বাসিন্দা শিবপদ দাস ২০১৪ সাল থেকে 'মোহিনী কাহারবা ঢাকি সমিতি' নামে একটি সংগঠন তৈরি করে মহিলাদের ঢাক প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছিলেন। বর্তমানে জনা পঞ্চাশের মহিলা ঢাকি শিবপদর কাছে ট্রেনিং নিচ্ছেন, যারা এরাজ্যের পাশাপাশি ভিন্ন রাজ্যে সুনামের সঙ্গে ঢাক বাজাতে যাচ্ছেন। আর, এবার সূদূর সুইজারল্যান্ড থেকে ঢাক বাজানোর বরাত পাওয়ায় খুশি প্রশিক্ষক শিবপদ।

 

কয়েকদিন আগে নবান্ন থেকে সুইজারল্যান্ড ঢাক বাজানোর জন্য দুই পুরুষ ও দুই মহিলাকে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়, তবে সঠিক সময় হাতে পাসপোর্ট ও ভিসা না পাওয়ার কারণে শিবপদ নিজে যেতে পারছেন না, তাই কিছুটা হলেও তার মন খারাপ। যদিও দলের মেয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে, এটা ভেবে যথেষ্টই আনন্দিত তিনি। 

তিনি বলেন, "একটা সময় ছিল যখন ভাবা হতো মহিলারা ঢাক বাজাবে! সমাজ কি চোখে নেবে বিষয়টি ! কিন্তু কয়েক বছর ধরে সেই ধ্যান-ধারণা ঝেড়ে ফেলে আধুনিকীকরণ হয়েছে সমাজের একটা অংশের। আর তাই পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহিলারাও ঢাক বাজাচ্ছেন। এরাজ্য তো বটেই, ভিন রাজ্যে ও বিদেশেও মহিলারা পাড়ি দিচ্ছে ঢাক বাজানোর সূত্রে। শুধু তাই নয়, এই বাদ্যযন্ত্রের ফলে রুজি-রোজগার করে স্বনির্ভর হচ্ছেন তারা।"

বর্তমান সময়ে যখন বেকার সমস্যা বাড়তে শুরু করছে, তখন ঢাকিরা বলছেন, বর্তমান প্রজন্মের নারী-পুরুষ স্বনির্ভর হতে এই পেশাতে আসতেই পারে।