কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা খেল মমতা সরকার। হাওড়া-ভিত্তিক তৃণমূল নেতা এবং পরিবেশবাদী কর্মী তপন দত্তের খুনের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বহাল রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। ৯ জুন বিচারপতি রাজশেখর মন্থা তপন দত্ত হত্যাকাণ্ডের সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার এবং একজন অভিযুক্ত ষষ্ঠী গায়ন ডিভিশন বেঞ্চে গেলেও শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ আবেদন খারিজ করে দেয়।
কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার। যদিও রাজ্য সরকারের কর্তারা বলছেন, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার কথা ভাবছে।
২০১১ সালের ৬ মে তপন দত্তকে গুলি করে খুন করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীসহ ১৩ জনের নাম জানা গেছে। বিষয়টি নিম্ন আদালত, কলকাতা হাইকোর্ট এমনকি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে, কিন্তু এখনও বিচার পাননি মৃত তপনের স্ত্রী প্রতিমা দত্ত। এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনার অভিযুক্তদের শাস্তি হয়নি। রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তে সিআইডি তদন্তের দায়িত্ব নেয়। তদন্তের পর সিআইডি জানায়, তপন দত্ত জল ভর্তির বিরোধিতা করায় তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে।
২০১১ সালের ৩০ আগস্ট মামলার চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। অভিযোগপত্রে হাওড়ার একাধিক তৃণমূল নেতার নাম ছিল। এরপর ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতে আরেকটি সম্পূরক চার্জশিট পেশ করে সিআইডি। সেখানে কোনও কারণ দর্শানো ছাড়াই অভিযোগপত্র থেকে নয়জনের নাম বাদ দেওয়া হয়। এরা সকলেই হাওড়া তৃণমূলের নেতা। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, চার্জশিটে নামযুক্ত বাকি পাঁচ অভিযুক্তকে প্রমাণের অভাবে রেহাই দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ২০১৭ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ নিম্ন আদালতের নির্দেশ বাতিল করে।
হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখেন এবং হাইকোর্টকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। তপন দত্তের স্ত্রী প্রতিমা দত্তের দাবী, অরূপ রায়, কল্যাণ বসু, হাওড়ার ষষ্ঠী গায়েন সহ বহু তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক এই খুনের সঙ্গে জড়িত। আগের চার্জশিটে অরূপের নাম ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
No comments:
Post a Comment