মানব বলিদানের অভিযোগ। নাবালিকার মৃতদেহের কাছ থেকে উদ্ধার সিঁদুর ও ফুল। ঘটনায় বিক্ষুব্ধ স্থানীয় লোকজন এক তান্ত্রিককে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। পুলিশ কোনওরকমে অভিযুক্ত তান্ত্রিক যুবককে বাঁচিয়ে হেফাজতে নেয়। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং একটি খুনের মামলা নথিভুক্ত করেছে, তবে 'মানব বলিদান' অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের চাঁচলে গৌরহন্দ গ্রামে পুকুরের পাড়ে এক নাবালিকাকে পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা। নাবালিকা ওই এলাকার বাসিন্দা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেরালায় মানুষ বলির ঘটনার গুজব ওঠার পর মালদায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে নাবালিকাটির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না, তবে নির্দিষ্ট সময় পরেও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা তাকে খুঁজতে শুরু করে। সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। সকালে বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে ওই নাবালিকাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চাঁচল থানার পুলিশ। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার পিছনে অন্য কিছু ভাবা হলেও তন্ত্র সাধনার জন্য খুনের অভিযোগ গ্রামবাসীদের।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, এলাকার এক যুবক তার শক্তি বাড়াতে ঘুমের অভ্যাস করছেন। অনেক দিন ধরেই এই কাজ করছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, বিক্রম ভগত এখনও অজ্ঞান থাকায় তাকে গ্রেফতার করা যায়নি। তাকে পুলিশি নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাকে চাঁচল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মেয়েটির দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
চাঁচল থানার পুলিশ জানায়, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা খুনের মামলা দায়ের করেছি। অভিযুক্ত এখনও অজ্ঞান। এ কারণে তদন্ত করা সম্ভব হয়নি। আমরা অভিযোগ সম্পর্কে অবগত, তবে তদন্তের পরই মন্তব্য করব। মালদহের চাঁচলের গৌরহন্দ গ্রামের বাসিন্দারা দাবী করেছেন, মৃত মেয়েটিকে শেষবার তান্ত্রিক বিক্রম ভগতের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। নিহতের আত্মীয় শম্পা বসাক জানান, "বিকেলে মেয়েটি খেলছিল। বিক্রম কখন তাকে তুলে নিয়েছিল আমরা খেয়ালই করিনি। আমরা তাকে গ্রামে এড়িয়ে চলি কারণ সে জাদুবিদ্যার চর্চা করে।"
নিহতের প্রতিবেশী কমলা রবিদাস বলেন, “ভগতের বাড়ির সামনে একটি বেদি রয়েছে। তাকে প্রায়ই স্থানীয় শ্মশানে হাড় ও মাথার খুলি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। দেখা হলে আমরা সেই মেয়েটির সম্পর্কে জানতে চাই কিন্তু সে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমরা ধাওয়া করি এবং সে ধরা পড়ে যায়।"
No comments:
Post a Comment