সন্দেহের বশবর্তী হয়ে স্ত্রী ও কন্যাকে নৃশংস ভাবে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের জালে ধরা পড়ে যায় অভিযুক্ত স্বামী সঞ্জয় পাল, পেশায় সে একজন ই-রিকশা চালক। ঘটনা উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের।
শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে গাজিয়াবাদের সিহানি গ্রামের সাদিকনগরে খুন হন রেখা পাল (৩৫) ও তাশু (১৪)। এদিনই দুপুর ১টার দিকে ধরা পড়ে অভিযুক্ত। সে তার অপরাধ স্বীকার করে এবং পুলিশকে জানায় যে, তার সন্দেহ হয়, রেখার সাথে কারও প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে স্ত্রীকে এমন করতে নিষেধ করলেও তিনি তা শোনেননি। এমনকি তাদের মেয়ে তাশুও তার মা রেখাকে সমর্থন করতেন, তাই রেগে গিয়ে মেয়েকেও প্রাণে মেরে ফেলে সে।
সে জানায়, প্রথমে বেলচা দিয়ে রেখার গলা কেটে তারপর বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করে। এরপর তিন তলায় বারান্দায় ঘুমন্ত মেয়েকে মারে। দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত হলে সে ঘরের সিটকিনি লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে যে, দুপুর ১২টার দিকে এক যুবক ফোনে জানিয়েছিল যে, সিহানি গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় পাল তার স্ত্রী এবং মেয়েকে খুন করেছে, যে পুরানো বাসস্ট্যান্ডের কাছে রয়েছে। পুলিশ তৎক্ষনাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শনাক্ত করে, তাকে হেফাজতে নিয়ে থানায় ধরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। যে যুবক এই তথ্য দিয়েছেন, তিনি সঞ্জয় পালের পরিচিত।
পুলিশ সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে ২০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। চার-পাঁচ বছর ধরে সন্দেহ করেছিল যে, তার স্ত্রীর প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক রয়েছে। অনেকবার সে তাকে অনুসরণ করে, তিনি নয়ডা এবং আরও অনেক জায়গায় যেতেন। সেখানে গার্ডকে জিজ্ঞাসা করলে তার সন্দেহ, বিশ্বাসে পরিণত হয়। গত এক বছর ধরে তিনি তার মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে যেতে থাকেন। এতে সঞ্জয়ের রাগ আরও বেড়ে যায়।
পুলিশের কথায়, তাদের বড় ছেলে কুনাল পাল, পাশের ঘরেই থাকা সঞ্জয়ের বাবা খেমচাঁদের সঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরলে তার ভূমিকা স্পষ্ট হবে। আপাতত কুনালের বাড়িতে না থাকার কথা বলেছেন সঞ্জয়।
সঞ্জয় পালের একটি পোষ্য কুকুরও রয়েছে। সঞ্জয় পুলিশকে জানিয়েছে, রেখা কুকুরটিকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন। শুক্রবার ভোররাতে সঞ্জয় যখন ঘটনাটি ঘটিয়েছিল, কুকুরটি ঘেউ ঘেউ করতে থাকে কিন্তু সঞ্জয়ের মন গলেনি। কুকুরটির ঘেউ ঘেউ আওয়াজে আশপাশের কেউ রেখা ও তাশুর চিৎকার শুনতে পায়নি।
এসপি সিটি নিপুন আগরওয়াল জানান, মামলায় অভিযুক্ত স্বামী সঞ্জয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে।জিজ্ঞাসাবাদে সঞ্জয় তার সন্দেহ ও খুনের কথা স্বীকার করেছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রেখার ভাই নীতিন, সঞ্জয় ও তার ছেলে কুনালের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দায়ের করেছেন।
No comments:
Post a Comment