কলকাতায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নির্মাণ প্রকল্পে বারবার সমস্যার সৃষ্টির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে দায়ী করলেন বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মেট্রোর পথের নকশায় পরিবর্তনের ফলে একের পর এক বাড়িতে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে এবং কাজে দেরি হচ্ছে। মেট্রো টানেলে ফুটো হওয়ার কারণে প্রায় ১২টি বাড়িতে ফাটল ধরে এবং শতাধিক লোককে ঘর ছাড়া হতে হয়।
নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মেলনীতে শনিবার রোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারের ভুলের কারণে বৌবাজারে বারবার সমস্যা হচ্ছে। এই মুখ্যমন্ত্রী সব জান্তা। মূল ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো ডিজাইন দেখুন এবং সংশোধিত ডিজাইন দেখুন, তবেই বুঝতে পারবেন কেন আমি বলছি রাজ্য সরকার দায়ী।"
এখানেই থেমে না থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে দুর্বল মস্তিষ্ক বলেও কটাক্ষ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'এই দুর্বল মস্তিষ্ক প্রসূত, যিনি বলেন ১৫০০ কেজি ওজনের বাচ্চা জন্ম গ্ৰহণ করে, ১১৭০ টি দেশ পৃথিবীতে, চপ ভাজতে বলেন, ঘুগনি-মুড়ি বিক্রি করত বলেন। সেই দুর্বল মস্তিষ্ক প্রসূত মুখ্যমন্ত্রীর জন্য বৌবাজারের এই অবস্থা।'
শুভেন্দু অধিকারীর দাবী, জোকা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত মেট্রোর নকশার আগে মেট্রো টানেলে কোনও বউবাজার ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে, পরিবহণ দফতর এবং কলকাতা পুরসভা যৌথভাবে মেট্রো চালানোর রাস্তায় পরিবর্তন করেছে। তাই রাজ্য সরকারের ভুলের কারণে আজ তার মূল্য দিতে হচ্ছে বৌবাজারের বাসিন্দাদের।
উল্লেখ্য, বউবাজার মেট্রোর দুর্যোগ পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার নবান্নে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে বউবাজার মেট্রোর বেহাল দশার সমস্যা সমাধানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম সহ মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব এলাকা পরিদর্শন করেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
এদিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, কেআরসিএল-এর সঙ্গে মিলে শিবিরের আয়োজন করতে হবে, যেখানে উপস্থিত থাকবেন কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ, কাউন্সিলর, বিধায়ক, স্থানীয় সাংসদরা। এছাড়া ১২টি ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে আপাতত হোটেলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আরও, যদি আরও ফাটল দেখা দেয় এবং আরও পরিবার প্রভাবিত হয়, একই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিৎ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এই ধরনের ঘটনা এড়াতে কেএমআরসিএলকে আরও কাজের জন্য মাটি পরীক্ষা করা উচিৎ।
No comments:
Post a Comment