মৃত্যু হল বিশ্ব বিখ্যাত সেই 'নিরামিষাশী' কুমির বাবিয়া'র। সোমবার কেরালার কাসারগোদের শ্রী আনন্দপদ্মনাভ স্বামী মন্দিরে মারা যায় কুমিরটি। এই কুমিরটি 75 বছর ধরে মন্দিরে আসা ভক্তদের প্রধান আকর্ষণ ছিল। মন্দিরের পুরোহিতদের মতে, 'ঐশ্বরিক' কুমিরটি তার বেশিরভাগ সময় গুহার ভিতরে কাটায় এবং বিকেলে বেরিয়ে আসে।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, যে গুহায় দেবতা অদৃশ্য হয়েছিলেন সেই গুহাকে রক্ষা করতেন কুমির বাবিয়া। মন্দির কর্তৃপক্ষের মতে, বাবিয়া দিনে দু'বার মন্দিরের প্রসাদ খেতেন। তাই একে নিরামিষাশী কুমির বলা হয়।
প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, কয়েক শতাব্দী আগে এই শ্রী আনন্দপদ্মনাভ স্বামী মন্দিরে একজন মহাত্মা তপস্যা করতেন। এই সময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ শিশু রূপে আসেন এবং মহাত্মাকে তার দুষ্টুমি দিয়ে হয়রান করতে থাকেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তপস্বী তাকে ধাক্কা দিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে নির্মিত পুকুরে ফেলে দেন। কিন্তু ঋষি ভুল বুঝতে পেরে পুকুরে সেই শিশুটিকে খুঁজলেও জলে কাউকেই খুঁজে পান না এবং একটি গুহার মতো ফাটল দেখা দিল। বিশ্বাস করা হয় যে, ঈশ্বর এই গুহা থেকেই অদৃশ্য হয়েছিলেন। কিছুক্ষণ পর এই গুহা থেকে একটি কুমির বেরিয়ে আসতে থাকে।
কুমির 'বাবিয়া' পুকুরে বসবাস করেও মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী খায়নি কখনই। দিনে দু'বার সে ভগবানকে দেখতে বের হত এবং ৭০ বছর ধরে ভক্তদের বিতরণ করা ভাত ও গুড়ের 'প্রসাদম' খেত। বাবিয়া আজ পর্যন্ত কারও কোনও ক্ষতি করেনি এবং মন্দিরে আগত ভক্তদের দেওয়া ফল ইত্যাদি সে শান্তিতে খেত। তারপর পুরোহিতের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্রই পুকুরে তৈরি গুহার মতো ফাটলে গিয়ে বসত।
উল্লেখ্য, মন্দির চত্বরে তৈরি পুকুরে বাবিয়ার বসবাসের ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। বাবিয়া কীভাবে এবং কোথা থেকে পুকুরে এসেছে তা কেউ জানত না। আর বছরের পর বছর ধরে মন্দিরের ভক্তরা ভাবতে থাকেন যে বাবিয়া হলেন স্বয়ং পদ্মনাভনের দূত।
No comments:
Post a Comment