দুর্গা পুজোর সময় মহাত্মা গান্ধীর মতো অসুরের মূর্তি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড়। এবার এ নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার ভবানীপুরে তৃণমূলের বিজয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "দুর্গা পুজোর নামে গান্ধীজিকে অসুরে পরিণত করা হয়েছে! কি শাস্তি হওয়া উচিৎ? মানুষ শাস্তি দেবে, কিন্তু অভিশাপ। এটা জেনে খুব খারাপ লাগল। এটা লজ্জাজনক। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।” দক্ষিণ কলকাতার রুবি পার্কে সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভায় দুর্গা পূজা নিয়ে বিবাদ হয়েছিল।
পূজার সময় পূজার প্রতিমার ছবি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হয়। দেখা যায় অসুরের মূর্তি মহাত্মা গান্ধীর মুখের মতো। শুধু তাই নয়, জাতির পিতার মতো অসুর মূর্তির গায়ে চশমা ও ধুতিও পরানো।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি প্রকাশের পর প্রশাসন তৎপর হয় এবং সপ্তমীর রাতে চুল ও গোঁফ লাগিয়ে প্রতিমার চেহারা পাল্টে দেয় পুলিশ। বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন, "আপনি কি গান্ধীজিকে দেশের নেতা মনে করেন?" না, আপনি রাজি না?" এরপর বিজেপিকে নিশানা করে তিনি বলেন, "যারা কথায় কথায় বলে, মমতাজি দুর্গা পূজা করতে দেন না, সরস্বতী পূজা করতে দেন না, আপনারা গান্ধীজিকে অসুর বানিয়েছেন। কি শাস্তি হওয়া উচিৎ? আমরা শাস্তি দেব না। মানুষ শাস্তি দেবে।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি খুবই দুঃখিত, কিন্তু আমি কাউকে কিছু বলিনি, কারণ আমি পুজোর সময় গোলমাল করতে চাইনি। আমি চেয়েছিলাম পুজো নির্বিঘ্নে হোক। জানলে মানুষ প্রতিবাদ করত। আমি শান্তিপূর্ণভাবে পূজা করতে চেয়েছিলাম। জৈন ধর্মগুরুদের সম্পর্কে কেউ কিছু বলবেন? এসব কি সহ্য করা যায়?" মমতা আরও বলেন, "প্রথমে আমি এসব জানতাম না।"
উল্লেখ্য, চন্দ্রচূড় গোস্বামী সেই পূজার প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। নিজেকে সর্বভারতীয় হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি বলে দাবী করেন তিনি। চন্দ্রচূড় 2021 সালের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি সেই বছর ভবানীপুর উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু মাত্র 81 ভোট পেয়েছিলেন। বিতর্ক প্রসঙ্গে চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘কোনও আপত্তি ছাড়াই পুজো হয়েছে। কিন্তু গান্ধীকে অসুর হিসেবে দেখানো হয়নি। এই মিল ছিল সম্পূর্ণ কাকতালীয়। আবার, আমি অস্বীকার করছি না যে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীকে যথার্থই জাতির পিতা বলা হয়। আমরা এটা মানি না। আমরা নেতাজিকে শ্রদ্ধা করি।"
No comments:
Post a Comment