নাম না করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে 'গদ্দার-ডাকাত' বলে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের। সেইসঙ্গেই মালদার প্রশাসনিক সভা থেকে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গেও সরব হন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি তো একদিকে খুশি, কয়েকটা ডাকাত-গদ্দার আমার দল থেকে বিদায় নিয়েছে। এই ডাকাত গদ্দাররাই এই কাজগুলো করেছিল। আমার মনে আছে পুরুলিয়ার কোটাই কেটে দিয়েছিল। এক সময় দেখলাম পুরুলিয়ার ছেলে মেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না।'
সভা থেকেই আদালতের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধ যাতে এই বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখা হয়। তিনি বলেন, 'মাননীয় আদালতকে দুপায়ে প্রণাম করে বলব, ব্যবস্থা নেবেন। একবার খোঁজ নিয়ে দেখুন, অন্যরা অন্যায় করলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবেন। বিচারে বিশ্বাস করি। কিন্তু একবারও জেনেছেন, যিনি আজকে সর্বস্ব বিশারদ হয়ে বলে দিচ্ছেন ১০০ দিনের টাকা দেবে না, আবাসনের টাকা দেবে না, রাস্তার টাকা দেবে না। মনে হচ্ছে যেন নিজের পকেটের টাকা দিচ্ছে? টাকাটা তো জনগণের, শাড়ি কিনতে গেলেও জিএসটি দিতে হয়, তার মানে সেই ট্যাক্সটা কে দেয়, জনগণ। ইনকাম ট্যাক্স দিতে হয়, দেয়টা কে, জনগণ। মনে রাখবেন সব ট্যাক্স আপনাকে দিতে হবে আর মাছের তেলে মাছ ভেজে সেটুকুও খেতে দেবে না। উল্টোপাল্টা কথা বলে বেড়াবে।'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'শিক্ষক নিয়োগে যখন দুর্নীতির অভিযোগ হয়েছিল, আমি কোনদিনও কিছু বলিনি। আমার বলা শোভা পায় না। আদালতে কেস চলছে। আমি আশা করি ভালো বিচার হবে। সাময়িকভাবে কেউ কেউ কাউকে ভুল বুঝতেই পারেন। যদি কেউ অন্যায় করে তার দায়িত্ব আমরা কেউ নেব না।'
মুখ্যমন্ত্রীর দাবী, পুরুলিয়ার ছেলেমেয়েদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হয়েছিল। পুরুলিয়ার কোটা কেউ কেউ নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, 'সব জেলার কোটা থাকে। একসময় দেখলাম পুরুলিয়া ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না। কেন পুরুলিয়ার ছেলে-মেয়েরা বঞ্চিত হবে? পুরুলিয়া ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করেছিল। তারপর আমি উদ্যোগ নিয়ে কোটা বাড়িয়ে তাদের ব্যবস্থা করে দিলাম।'
এখানেই থামেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে কর্মসংস্থানের চিত্র যে আগের থেকে অনেক ভালো সেকথাও এদিন বুঝিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি বিরোধী দলকে তোপ দেগে তিনি বলেন, 'মনে রাখবেন, দেশে বেকারত্বের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দিল্লী সরকারের আমলে। আর আমাদের রাজত্বে আমরা ৪০ শতাংশ বেকারের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। মনে রাখবেন আগে মানুষ একমুঠো ভাত পেত না, পিঁপড়ে খেয়ে জীবনধারণ করতেন। আমি গিয়ে দেখে এসেছি বেলপাহাড়িতে। আজকে মানুষের ঘরে বিনা পয়সায় চাল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এরপরেও বলতে লজ্জা করে না! গিয়ে বলবে এরা সব চোর। তুই বড় ডাকাত। আমরা যদি চোর হই, তোরা তাহলে ডাকাত। নিজেরা লুকিয়ে-লুকিয়ে কী কী করছো বাবুরা।'
No comments:
Post a Comment