'ওনাকে পাগলা গারদে দেওয়ার দরকার আছে', এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই তীব্র আক্রমণ শানালেন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। মালদার সভা থেকে করা মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার চাঁদপাড়া বাজারে যশোর রোড অবরোধ করেন মতুয়া ভক্তরা৷ তাদের এই অবরোধে শামিল হন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার সহ অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্ব ৷ ডঙ্কা- কাঁসা নিশান নিয়ে চলে অবরোধ। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাগল বলে কটাক্ষ করেন বিজেপি নেতা। পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে ডঙ্কা-কাঁসা তুলে মুখে মারার নিদান দেন তিনি।
স্বপন মজুমদার বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদার একটা সভায় বসে মতুয়া সমাজের আরাধ্য হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরকে নিয়ে যেভাবে ব্যাঙ্গাত্মক সুরে গরুচাঁদ ও রঘুচাঁদ বলে মন্তব্য করেছেন, এতে করে তাঁদের এবং গোটা মতুয়া সমাজকে অপমান করা হয়েছে। এর জন্য তাঁকে ধিক্কার জানাই।তাঁকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।'
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বিজেপি বিধায়ক বলেন, 'বড় মা-র আশীর্বাদ কীসের জন্য নিয়েছিলেন তিনি, শুধু কি ভোট বাক্সের জন্য? সেই ঠাকুরনগরে যাদের জন্য এসেছিলেন, তাদের নামই আপনি জানেন না। তার মানে ভাওতাবাজি করতে এসেছিলেন। ভাওতাবাজি করতে একবার মুসলিমদের কাছে একবার মতুয়াদের কাছে যান, আপনি চাইছেনটা কী?' 'ওনার মাথা খারাপ হয়ে গেছে, ওনার ট্রিটমেন্ট করানো দরকার আছে, ওনাকে পাগলা গারদে দেওয়ার দরকার আছে। মতুয়াদের যেভাবে অপমানিত করেছে, সমস্ত মতুয়া সমাজের মানুষ ক্ষুব্ধ। মতুয়ারা চায় নিঃশর্ত ক্ষমা এবং ওনার পদত্যাগ দাবী করছেন মতুয়ারা', সংযোজন স্বপন মজুমদারের।
এখানেই থামেননি বিধায়ক। তিনি বলেন, 'পরের দিন সভা থেকে বলেছেন-ভুলবশত বলে ফেলেছেন। আমাদের কী দয়া দেখিয়েছেন নাকি তিনি! কীভাবে বলেছেন-আমার হয়তো ভুল হয়েছে। ভুল করে আবার হয়তো কিসের? তাঁর প্রায়শ্চিত্ত করার দরকার আছে। একজন মনীষী-মহাপুরুষ-কে নিয়ে যেভাবে তিনি বক্তব্য রেখেছেন, এর আগেও আমরা একাধিক শুনেছি। ওনার মাথায় গণ্ডগোল আছে, ওনার ট্রিটমেন্ট করানো দরকার আছে। তৃণমূলে যারা বাকি নেতারা আছেন তাদের বলব, সব তো চোর, সব জেলখানায়। বাকি ওনাকে পাগলা গারদে ভরে দিন, বাংলার মানুষ বেঁচে যাক।'
বিজেপি বিধায়ক আরও বলেন, 'এর আগেও মতুয়া ভোট ব্যাংকের জন্য একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নিজের ভাষণে বলেছেন ঠাকুরবাড়িতে এসেছেন, বড়মার কাছে এসেছেন। সেই বাড়িতে আসার পরে তার এটুকু সেন্স নেই যে, যেই হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের জন্য যাচ্ছি, তাঁর নামটুকু সে জানে না, তার মানে মতুয়াদের গরু-ছাগল ভাবে সে। মতুয়াদের ব্যবহার করছে ভোট বাক্সের জন্য।
বিজেপি নেতার নিদান, 'আমি সমগ্র মতুয়া সমাজের মানুষকে বলব, আগামী নির্বাচনে যখন এই তৃণমূল নেতারা বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোট বাক্সের জন্য আপনাদের ব্যবহার করার চেষ্টা করবে, আপনারা এই লাঠি-ডঙ্কা-কাঁসা নিয়ে সবাই তৈরি থাকবেন, যারাই ভোট চাইতে যাবে, তাদের মুখে তুলে মারবেন, যাতে ওই মুখ দিয়ে আর কুরুচিকর মন্তব্য না বেরোয় কোনও দিন।' তিনি বলেন, 'আমাদের বাংলার কলঙ্ক, আমি বলব এই মুখ্যমন্ত্রীকে পাগলা গারদে পাঠানো দরকার, তাঁর মতি ভ্রষ্ট হয়ে গেছে। ১৫০০ কেজির বাচ্চা, বিষ্ণুমাতা এসব অনেক ভুলভাল বক্তব্য রেখেছেন এবং এখন আমাদের গুরুচাঁদ ঠাকুরকে নিয়েও একই বক্তব্য রেখেছেন।'
এমনকি তৃণমূলের যেসব নেতারা বসেছিল পিছনে তারাও জিজ্ঞেস করার পরেও ভুল ধরিয়ে দিতে পারেনি। কেমন ধরণের হার্মাদ বাহিনীদের নিয়ে চলে; যারা সমাজ, সমাজের প্রতিষ্ঠাতা, যারা আমাদের আরাধ্য তাদের সম্পর্কে জানে না, এরকম নিয়ে চলে তৃণমূলের সরকার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের দাবী, ওনাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরণের মন্তব্য আর না করে তার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। যতক্ষণ না আমরা এই প্রতিশ্রুতি পাবো প্রশাসনের তরফ থেকে, ততক্ষণ আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব, যোগ করেন বিজেপি বিধায়ক।
No comments:
Post a Comment