মালদা: যুবতীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সহবাস করেও বিয়েতে অস্বীকার। পাশাপাশি জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগ তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। যুবতী এবং তার পরিবারের আরও অভিযোগ, তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নাম বলে ওই যুবক তাদের প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। পুলিশের দ্বারস্থ যুবতী। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের। ঘটনা সামনে আসতেই ব্যাপক শোরগোল গোটা এলাকায়। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ঘটনা। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে অভিযুক্ত যুবকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে ঘটনা প্রকশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। 'তৃণমূল মানেই সব ধরণের দুর্নীতি এবং অন্যায়', কটাক্ষ বিজেপির। 'দল কোনও রকম অন্যায় বরদাস্ত করে না, আইন আইনের পথে চলবে', পাল্টা তৃণমূল।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত স্থানীয় এক গ্রামেরই বাসিন্দা অভিযোগকারী ওই যুবতী। অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার এক গ্রামের বাসিন্দা যুবক, যে এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে ওই যুবতীর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করে। এমনকি শারীরিক সম্পর্কের ফলে যুবতী গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাকে বলপূর্বক গর্ভপাতও করানো হয়।
আরও অভিযোগ, যুবতী ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের জন্য বলা হলে, তা অস্বীকার করে অভিযুক্ত যুবক। এমনকি এই ঘটনা বাইরে জানাজানি করলে বা পুলিশে অভিযোগ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় ওই যুবক। শুধু তাই নয়, বাড়িতে গিয়ে অত্যাচারও করে যুবতীকে এবং এও জানায় তৃণমূলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাই তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু করতে পারবে না।
অবশেষে কোনও পথ না পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দ্বারস্থ হয় ওই যুবতী। থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগ পাওয়ার পরেই নড়েচড়ে বসেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। মামলা রুজু করে অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
অভিযোগকারী যুবতীর দাবী, ওই যুবক তাকে বিয়ে না করলে তার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক রয়েছে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেকবার সহবাস করেছে। আমি একবার গর্ভবতী হয়ে গেছিলাম। এখন বিয়ে করতে অস্বীকার করছে, প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। আমি বিচার চাই এবং ওকেই বিয়ে করব।'
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ সুত্রে যানা গিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের সন্ধান শুরু করেছে পুলিশ।অভিযুক্ত যুবকের শাস্তির দাবীতে সরব হয়েছেন এলাকাবাসীও।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, 'এই সব ফালতু কথা। কেউ দলের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করলে তার শাস্তি হবে। দল কোনও অন্যায় বরদাস্ত করবে না। আইন আইনের পথে চলবে। এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়।'
অপরদিকে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষান কেডিয়া বলেন, 'এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। সমস্ত রকমের দুর্নীতি এবং অপরাধ এই দলে হয়। এরা তাদের প্রশ্রয় দেয়। মুখে যতই বলুক, এরা কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। মানুষ সব দেখছে এখন।'
No comments:
Post a Comment