'শহীদ হওয়া গান্ধী পরিবারের একচেটিয়া কোনও অধিকার নয়', এভাবেই রাহুল গান্ধীকে নিশানা করলেন উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী গণেশ যোশী। শুধু তাই নয়, দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডকে 'দুর্ঘটনা' বলেও অভিহিত করেছেন বিজেপি নেতা।
গণেশ যোশী ভারত জোড়ো যাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠানে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন। তিনি বলেন, রাহুল গান্ধীর বোধগম্যতার ওপর আমি দুঃখিত। শহীদ হওয়া গান্ধী পরিবারের একচেটিয়া অধিকার নয়। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ভগত সিং, সাভারকর এবং চন্দ্রশেখর আজাদের বলিদান দেখেছে।"
গণেশ যোশী বলেন, 'রাহুল গান্ধী প্রায়ই বলেন যে, গান্ধী পরিবার দেশের জন্য অনেক বলিদান দিয়েছে। যদিও বাস্তবতা হল গান্ধী পরিবারের সদস্যদের সাথে যা ঘটেছিল তা একটি দুর্ঘটনা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার দেহরক্ষীর হাতে খুন হন, যখন রাজীব গান্ধী এলটিটিই সন্ত্রাসীদের আক্রমণে মারা যান।
যোশী আরও বলেন, শহীদ সেটাই, যেখানে একজন ব্যক্তি দেশের স্বার্থে হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে ঝুলে যান। অথবা দেশ রক্ষায় শত্রুর সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে বুকে গুলি লাগে। চন্দ্রশেখর আজাদ, ভগৎ সিং, রামপ্রসাদ বিসমিল, আশফাক উল্লাহ খান, দুর্গামল সহ হাজার হাজার মানুষ আছেন যারা দেশের জন্য হাসতে হাসতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন। তাঁরা জানতেন যে, তাঁদের পরিণতি মৃত্যু, কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যান। এটা প্রকৃত শহীদ, আকস্মিক মৃত্যু নয়।' শ্রীনগরে ভারত জোড়ো যাত্রার সমাপ্তিতে রাহুল গান্ধীর শহীদ নিয়ে বিবৃতির কটাক্ষ করে যোশী বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তি তার বুদ্ধিমত্তা এবং জ্ঞান অনুসারে কথা বলে।
গণেশ যোশী উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকারের কৃষি, কৃষক কল্যাণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সৈনিক কল্যাণ মন্ত্রী। তিনি জম্মু-কাশ্মীরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে ভারত জোড়া যাত্রা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কৃতিত্ব দেন।
যোশী বলেন, "এর কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রীকে। যদি তাঁর নেতৃত্বে ৩৭০ ধারা বাতিল না করা হতো এবং জম্মু-কাশ্মীরে স্বাভাবিকতা ফিরে না আসতো, তাহলে রাহুল গান্ধী লাল চকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন না।" বিজেপির তেরঙ্গা উত্তোলনের কথা উল্লেখ করে গণেশ যোশী বলেন, মুরলি মনোহর যোশী যখন লাল চকে তেরঙ্গা উত্তোলন করেছিলেন, তখন জম্মু-কাশ্মীরে সহিংসতা চরমে ছিল।
উল্লেখ্য, কন্যাকুমারী থেকে শুরু হওয়া কংগ্রেসের ভারত জোড় যাত্রা ৩০ জানুয়ারি (সোমবার) জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে শেষ হয়েছে। এ সময় শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা দিতে গিয়ে, রাহুল গান্ধী সেই মুহূর্তগুলি স্মরণ করেছিলেন যখন তাকে ফোনে তার ঠাকুরমা এবং বাবা রাজীব গান্ধীর খুনের কথা বলা হয়েছিল। তিনি বলেন, যারা হিংসা উসকে দেয়, তারা কখনই সেই যন্ত্রণা বুঝবে না।
রাহুল গান্ধী বলেন, "যারা হিংসা উসকে দেয়, যেমন মোদী'জি, অমিত শাহ'জি, বিজেপি এবং আরএসএস, তারা এই ব্যথা কখনই বুঝবে না। একজন সেনা জওয়ানের পরিবার বুঝবে, পুলওয়ামায় শহীদ সিআরপিএফ জওয়ানের পরিবার বুঝবে, কাশ্মীরিরা বুঝবে। যন্ত্রণা, যখন সেই ফোন কল আসে কারও কাছে।"
No comments:
Post a Comment