নদী কেবল আমাদের পানীয় জল দেয় না, ফসল চাষেও ব্যবহার করা হয় । নদীর তীরে স্নান ও কাপড় ধোয়ার কাজ অনেক জায়গায় করতে দেখা যায় । নদীর তীরে কুম্ভ ও মহাকুম্ভের আয়োজন করা হয়।
আমাদের দেশে নদীকে মা রূপে পূজো করা হয়। তবে জানেন কী এদেশে একটি নদী আছে যাকে অভিশপ্ত নদী বলে বিশ্বাস করা হয়। এই নদীর জল লোকে স্পর্শও করে না। চলুন জেনে নেই বিস্তারিত-
এই নদীর নাম কর্মনাশা নদী। এটি উত্তর প্রদেশে অবস্থিত। নদীটি উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হলেও এর বেশিরভাগই ইউপিতে পড়েছে। ইউপিতে এটি সোনভদ্র, চন্দৌলি, বারাণসী এবং গাজিপুরে প্রবাহিত হয় এবং বক্সারের কাছে পৌঁছে গঙ্গায় মিলিত হয়। কর্ম ও নাশা এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে এই নদীর নাম হয়েছে। যদি এর আভিধানিক অর্থ বের করা হয়, তাহলে এর অর্থ এমন একটি নদী যা কাজকে ধ্বংস করে বা নষ্ট করে।
লোকের বিশ্বাস, কর্মনাশা নদীর জল স্পর্শ করলে ভালো কাজ করলে তা নষ্ট হয়ে যায়। কোনও কাজে এর জল ব্যবহার করে না।
কারণ :
কথিত আছে, রাজা হরিশচন্দ্রের পিতা সত্যব্রত একবার তাঁর গুরু বশিষ্ঠের কাছে সশরীরে স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। গুরু তার ইচ্ছে পূরণ করতে অস্বীকার করেছিলেন। তখন রাজা সত্যব্রত গুরু বিশ্বামিত্রের কাছে এই অনুরোধ করেন। বশিষ্ঠের সঙ্গে বিশ্বামিত্রের শত্রুতা ছিল, এই কারণে তিনি সত্যব্রতকে তাঁর তপস্যার জোরে শারীরিকভাবে স্বর্গে পাঠিয়েছিলেন।
এই দেখে ইন্দ্রদেব রেগে গেলেন এবং রাজার মাথা নীচে আর পা ওপরে অর্থাৎ উল্টো করে মর্তে পাঠিয়ে দেন। যা দেখে বিশ্বামিত্র তাঁর তপস্যায় রাজাকে স্বর্গ ও মর্ত্যের মাঝখানে আটকে দেন এবং তারপর দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন।
রাজা সত্যব্রত আকাশে উল্টো ঝুলে ছিলেন, যার কারণে তাঁর মুখ থেকে লালা ঝরতে থাকে। বিশ্বাস করা হয় এই লালা দিয়ে এই নদীটি তৈরি হয়। সেসময় গুরু বশিষ্ঠ রাজা সত্যব্রতকে চন্ডাল হওয়ার অভিশাপ দেন। তাই লোকেরা বিশ্বাস করে যে লালা থেকে নদী সৃষ্টি এবং রাজা অভিশাপ পাওয়ায় এই নদী অভিশপ্ত।
No comments:
Post a Comment