তিনজলায় শিশুকন্যা খুনের ঘটনায় জেরায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। নবরাত্রিতে বলিদান করলে স্ত্রী সন্তান লাভ করবেন-তান্ত্রিকের এমনই নিদান, তাই সন্তান প্রাপ্তির আশায় অপহরণ করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয় ওই শিশু কন্যাকে। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত বিষয়টি স্বীকার করেছে। তার তথ্যের সত্যতা যাচাই করছেন তদন্তকারীরা। তান্ত্রিকের খোঁজও শুরু হয়েছে।
তিলজলায় ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছে। সকাল থেকে নিখোঁজ থাকার পর রবিবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটের রান্নাঘর থেকে ওই শিশুর দেহ উদ্ধার হয়। এরপর থেকেই তিলজলায় তোলপাড় শুরু হয়। অলোক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশুটির হাত, পা ও মুখে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।
তিন জেলায় একই আবাসনের চারতলায় থাকে শিশুটির পরিবার। সকালে তার মা তাকে আবর্জনার থলি ফেলে আসতে বলেছিল শিশুটি নিচে যায় দীর্ঘক্ষণ পর ফিরে না এলে তার পরিবারের সদস্যরা খোঁজ শুরু করেন। শেষমেষ প্রতিবেশীর রান্নাঘর থেকে উদ্ধার হয় শিশুটির দেহ। রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে একটি বস্তার মধ্যে দেহটি লুকানো ছিল বলে, জানিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে শিশু কন্যার মাথায় ক্ষত ছিল, তার হাত-পা বাধা ছিল।
এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তিলজলা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ দেখাতে তিলজলা থানায় পৌঁছে যান শিশুর আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলে থানা ঘেরাও করেন তারা। রবিবার রাতে এই নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হতে থাকে পরিবেশ। কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় তিলজলা থানা। পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ তুলে থানায় ঘেরাও করেন। সময় যত গড়ায়, বিক্ষোভকারীরা আরও সহিংস হয়ে ওঠে এবং একসময় বিক্ষোভকারীরা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
অভিযোগ, বন্ধ গেটের উল্টো দিকে থাকা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোঁড়া এবং পুলিশের প্রিজন ভ্যান ও মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। ইটের আঘাতে ২ পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন বলেও জানা গেছে। এমন অবস্থায় থানার পেছনের গেট থেকে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী প্রবেশ করে। আন্দোলনরত মহিলারা থানার গেটের সামনে অবস্থান নেন। তাদের জন্য মহিলা পুলিশও ডাকা হয়। এরপর ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে রাস্তায় ঢুকে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সামান্য লাঠিচার্জ করলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ ঘটনায় দুইজনকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ।
বিক্ষোভকারীরা যাতে ফিরে না আসে তা নিশ্চিত করতে পুলিশ আশপাশের রাস্তায় টহল দেয়। এদিকে অভিযুক্তকে জেরা করে তান্ত্রিকের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।
No comments:
Post a Comment