দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে সামনের ডান পা। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে সুস্থ করে তুলেছেন বনকর্মীরা। কিন্তু এরপরও জঙ্গলের স্বাভাবিক জীবনে আর ফেরা সম্ভব নয় বছর পাঁচেকের মেহুলের। তাই আদরের এই ছোট্ট হরিণ শাবকের ঠিকানা হবে বাঁকুড়ার জয়পুর রেঞ্জ অফিস থেকে সোজা কোনও চিড়িয়াখানায়।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের জয়পুর রেঞ্জের জয়পুর গভীর জঙ্গল। যেখানে নানান বন্য জীব জন্তুর সাথে রয়েছে চিতল হরিণও। মাস দুই- তিনেক আগে জয়পুর জঙ্গলের শুকনো পুকুর এলাকায় রাস্তার পাশে আহত হয়ে পড়ে থাকা একটি হরিণ শাবককে উদ্ধার করেন জয়পুর রেঞ্জ অফিসের কর্মীরা। বনকর্মীরা দেখেন, হরিণ শাবকটির সামনের ডান পায়ে চোট রয়েছে। রাতের অন্ধকারে জঙ্গলের মাঝে রাস্তা পারাপারের সময় কোনও দ্রুতগতির গাড়িতে ধাক্কা লেগেই চোট পায় সে।
এরপর শুরু হয় শাবককে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা। চিকিৎসক দল নিয়ে এসে শুরু হয় চিকিৎসা। রেঞ্জ অফিসের এক চিলতে ঘরে নিয়মিত সেবা-শুশ্রূষা পেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে হরিণটি। বন দফতরের নিয়মিত নজরদারি ও পর্যবেক্ষণে আপাতত সুস্থ সে, এমনই জানিয়েছে বন বিভাগ। আদর করে তার নাম রাখা হয়েছে মহুল।
কিন্তু সুস্থ হয়ে উঠলেও জঙ্গল নয়, তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে কোনও চিড়িয়াখানায়। চোটের কারণে জঙ্গলের পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এক ঘরের মধ্যে বেশ কয়েক মাস কেটেছে মহুলের। তাই সে আর স্বাভাবিক জঙ্গলের জীবনে ফিরতে পারবে না। শুরু হবে এক নতুন জীবনের, আপাতত সেই অপেক্ষায় সুন্দরী জয়পুরের মহুল।
বিষ্ণুপুর পাঞ্চেত বন বিভাগের আধিকারিক অঞ্জন গুহ বলেন, 'গত দু মাস ধরে তাকে জয়পুর রেঞ্জের কর্মীরা নিজের সন্তানের মত আগলে রেখেছে। এটি শাবক পুরুষ হরিণ। আমরা ভালোবেসে ওর নাম দিয়েছি মহুল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোন হাইস্পিড গাড়িতে ওর ধাক্কা লেগে যায়।'
তিনি বলেন, 'এখন ও সুস্থ আছে। তবে ওকে জঙ্গলে পুনরায় ফেরানো মুশকিল হবে। কারণ ওরা যখন মানুষের সংস্পর্শে চলে আসে একটু শক হয়ে যায়। আমরা ওকে কোনও চিড়িয়াখানায় স্থানান্তরিত করব খুব শীঘ্রই।'
No comments:
Post a Comment