চীন পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ মোট ২২টি উন্নয়নশীল দেশে বড় আকারে ঋণ বিতরণ করেছে। বর্তমানে এসব দেশ ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় তাদের সামনে খেলাপিদের শঙ্কা রয়েছে। এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে চীন এসব দেশকে ২৪০ বিলিয়ন ডলারের বেলআউট ঋণ দিয়েছে। এসব ঋণের বেশির ভাগই দেওয়া হয়েছে শুধু ওইসব দেশকে, যেগুলো বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের অংশ। এর মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও তুর্কি। গবেষণায় বলা হয়েছে, অবকাঠামো উন্নয়নের নামে চীন এসব দেশকে ঋণ দিয়েছে।
এসব দেশের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের এবং তাদের জন্য ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হবে। ইউএস-ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা এডডাটা, বিশ্বব্যাংক এবং হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের তৈরি একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই বেলআউট ঋণের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীন যে ঋণ দিয়েছে তার ৮০ শতাংশই এই পাঁচ বছরে দিয়েছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এই দেশগুলোকে গত কয়েক বছরে অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।
একদিকে এই দেশগুলো চীনের কাছ থেকে বড় পরিসরে ঋণ নিয়েছে, অন্যদিকে করোনা সংকটের কারণে অর্থনীতি পুরোপুরি স্থবির হয়ে পড়েছে। এভাবে একদিকে যেমন রাজস্ব কমেছে, অন্যদিকে মূল্যস্ফীতি চরমে পৌঁছেছে এবং ঋণের সুদও বাড়ছে। এই সংকট পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো দেশগুলোর পিঠ ঠেকিয়ে দিয়েছে, অন্যদিকে ইসলামি বিশ্বে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা জোরদার করার চেষ্টা করা তুরস্কও চিন্তিত। এই সব সমস্যার মধ্যেই তুরস্কে সাম্প্রতিক ভূমিকম্প সেই ঝামেলা বাড়িয়ে দিয়েছে।
চীন বলেছে যে বিশ্বের ১৫০টি দেশ তার বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে। এটি এক দশক আগে শুরু করেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। চীন বলছে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়ানো। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে চীন। যদিও ভারত তা সমর্থন করেনি। ভারত এই প্রকল্পের অধীনে নির্মিত চীন পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের বিরোধিতা করে আসছে। কারণ এটি ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর প্রদেশের অংশ দিয়ে গেছে, যা পাকিস্তানের অবৈধ দখলে রয়েছে।
No comments:
Post a Comment