পাকা রাস্তা আটকে প্রতিশ্রুতিতেই, ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday 29 March 2023

পাকা রাস্তা আটকে প্রতিশ্রুতিতেই, ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি


মিলেছে শুধুই প্রতিশ্রুতি, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও পাকা রাস্তার অভাবে ধুঁকছেন গ্ৰামের বাসিন্দারা। ভোটের মুখে তুঙ্গে রাজনৈতিক বিতর্ক মালদার চাঁচলে। 


মালদহের চাঁচল -১ নং ব্লকের মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বামুয়া গ্রাম। এখানে প্রায় ৭৫ টি পরিবারের বসবাস। গ্রামের বুক চিরে গিয়েছে লাল মাটির ধূসর সড়ক। সেই সড়ক দিয়েই যাতায়াত কয়েকশো বাসিন্দার। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে গেলেও আজও উন্নতি নেই, লাল মাটির মেঠো পথেই হেঁটে চলেছেন আট থেকে আশি সকলেই। 


বাসিন্দারা কোনও ভাবে চলাচল করলেও রোগী ও হবু মায়েদের গাড়িতে চড়াতে হয় দেড় কিমি দূরে। রাস্তা খারাপের জন্য গ্রামে ঢোকে না কোনও অ্যাম্বুলেন্স বা যানবাহন। বামুয়া গ্রামে ঢোকার মুখেই প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা কয়েকদশক ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রাস্তার মাঝ বরাবর তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত, বেরিয়ে এসেছে ইট। খানা-খন্দে ভরা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সকলেই।


রাস্তা সংস্কারের দাবীতে একাধিক বার পঞ্চায়েত-প্রশাসনকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। পাক রাস্তারর দাবীতে কখনও আন্দোলন, আবার কখনও ভোট বয়কটের পথেও হেঁটেছেন, তাতেও লাভের ঘর শূন্য। এবারে ফের ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাসিন্দারা।


 রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের কাছে আশা রেখেছিলেন গ্রামবাসীরা। পথশ্রী ও রাস্তাশ্রী প্রকল্পের মধ্য দিয়ে গ্রামের রাস্তার হাল ফিরবে। কিন্তু গ্রামবাসীদের আশায় যেন জল পড়ল। একদিকে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১২ হাজার কিমি রাস্তার শিলান্যাস করলেন, অন্যদিকে তখন বামুয়ার বাসিন্দাদের মধ্যে হতাশার ছাপ স্পষ্ট।


বাসিন্দারা সাফ জানান, আগে রাস্তা তারপর ভোট। অভিযোগ, ভোটের সময় নেতারা প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু কাজ হয় না। রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। অ্যাম্বুলেন্স ও টোটো ঢোকে না গ্রামে। পড়ুয়ারা বর্ষার সময় স্কুলেও যেতে পারে না এই রাস্তা দিয়ে।


রাস্তা সংস্কার নিয়ে স্বজনপোষণ করেছে তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা, এমনই অভিযোগ তুলে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপির চাঁচল-১ নং ব্লক কো-কনভেনার প্রসেনজিৎ শর্মা বলেন, 'বামুয়া গ্রামের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এখানকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই রাস্তার জন্য আন্দোলন করছেন। কিন্তু এই সরকার গ্রাম সভাকে ও গ্রাম সংসদ সভাকে উপেক্ষা করে তারা নিজেদের মতো রাস্তা সংস্কারের পরিকল্পনা করেছেন। এর ফলে প্রকৃত রাস্তা বেহাল থেকে যাচ্ছে। তৃণমূল নেতারা শুধু ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দেয়। এবার বিজেপি রাস্তা করে দেবে।'


যদিও এই অভিযোগ নস্যাৎ করে পাল্টা দাবী করেছেন চাঁচল-১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সভাপতি শেখ আফসার আলী। তিনি বলেন, 'রাজ্য জুড়ে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।যেগুলো রাস্তা হয়নি, পরবর্তী ধাপে করা হবে। বামুয়া গ্রামের রাস্তাটি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের তহবিলে করা হবে, একথা বিধায়ক জানিয়েছেন। বিজেপি ১৫ লাখ টাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। তৃণমূল সরকার প্রতিশ্রুতির সাথে উন্নয়নও করে।'


 রাস্তা করে দেবে কংগ্রেস, এমনই দাবী চাঁচল-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ওবাইদুল্লাহ আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, রাস্তার টেন্ডার ধরা হয়েছিল পরিকল্পিত ভাবে। পঞ্চায়েত সমিতির তালিকা সঠিকভাবে অনুমোদিত হলে বামুয়া গ্রামের রাস্তা পাকা হয়ে যেত।


ভোটে আসে ভোট যায়, বামুয়ার রাস্তার চিত্র বদলায় না।নেতাদের প্রতিশ্রুতিতেও থমকে বামুয়ার উন্নয়ন। দোড়গোড়ায় পঞ্চায়েত নির্বাচন, আদৌ কি পাকা রাস্তায় হাঁটতে পারবেন বামুয়াবাসী! অপেক্ষার প্রহর গুনছেন সকলে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad