পাকিস্তানের বর্বরোচিত গণহত্যাকে বিশ্ব জুড়ে স্মরণ করতে ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবীতে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হল আলোচনা সভা। শুক্রবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এদিনের সভায় পাকিস্তানের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা.এ এফ এম আবদুল আলীম চৌধুরীর কন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, 'স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও শহীদদের সন্তানদের দেশের মধ্যেই যুক্তি তুলে ধরতে হয় একটি গণহত্যা হয়েছিল। একটি স্বীকৃতির জন্য ঘুরতে হয় বিশ্বের দ্বারে দ্বারে। শুধু তাই নয় জনগণের দ্বারে দ্বারেও যেতে হয়। এটা কখনই কাম্য নয়।'
আন্তর্জাতিক রাজনীতির কারণে বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলছে না উল্লেখ করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ওয়ান বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মো. শাহ আজম বলেন, 'বাংলাদেশে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়া গেলে যারা এই গণহত্যা চালিয়েছিল তারা বিশ্বের দরবারে মাথা উচু করে দাঁড়াতে পারবে না। ২৫ মার্চ, পাশাপাশি ১৯৭১ সাল জুড়ে বাঙালি জাতির ওপর যা হয়েছিল, তা ইতিহাসের পাতায় অভিশপ্ত একটি স্থান।' তাই দিনটি আন্তর্জাতিকভাবে স্মরণ করায় উচিৎ বলে তাঁর মন্তব্য।
আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও প্রাক্তন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম বাংলাদেশে সংগঠিত এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবী জানিয়ে বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডের পরেই আমরা পাকিস্তানিদের উত্তরসূরিদের পেয়েছি। তবে এখন দেশে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। এ সময়েই স্বীকৃতি আদায়ের সঠিক সময় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শুধু ২৫ মার্চ নয়, ১৯৭১ সালে সারা দেশ জুড়ে পাকিস্তানের চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, 'বাঙালিকে গণহত্যার বিষয়ে সন্দিহান করা হয়েছে এটা লজ্জা জনক। যারা এটা করেছে তারা স্বাধীনতার শত্রু। গোটা বিশ্বেই ঘৃণ্যভাবে তাদের পরিচিত রাখতে দিনটির স্বীকৃতি প্রয়োজন।'
এছাড়াও, সভায় উপস্থিত সকলে জানান, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও এই গণহত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত পাকিস্তান কোনও দিন তাদের এই নৃশংস কার্যক্রমের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেনি।আর সে কারনেই পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবী জানানো হচ্ছে।
ওয়ান বাংলাদেশের উদ্যোগে একই দাবী জানিয়ে ২৫ মার্চ দেশ জুড়ে একযোগে মানববন্ধন ও মোমবাতি প্রজ্বলন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে, বলেও জানান আয়োজকরা।
No comments:
Post a Comment