শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে কলকাতা হাইকোর্ট গ্রুপ 'সি'-এর ৮৪২ জন কর্মজীবীকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্ট সেই নির্দেশ আজ কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশের পর এখন যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা বেশ চাঞ্চল্যকর। ৮৪২ জনকে চাকরি থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তাদের মধ্যে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহতোর ভাই খোকন মাহতো, বিজেপি নেতা দুলাল চন্দ্র বারের মেয়ে বৈশাখী বার সহ একাধিক তৃণমূল নেতার আত্মীয়দের নামও সামনে আসছে।
শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি নিয়ে রাজ্যে আলোড়ন চলছে। প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ শিক্ষা দফতরের বহু প্রাক্তন শীর্ষ আধিকারিক বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই এবং ইডি বিষয়টি তদন্ত করছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ওএমআর শিট জালিয়াতির অভিযোগে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহতোর একমাত্র ভাই খোকন মাহতোর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝাড়গ্রামের একটি স্কুলে গ্রুপ সি-এর পদে কর্মরত ছিলেন খোকন মাহতো। সূত্র জানায়, ওএমআর শিটের সঙ্গে নম্বরের অমিল পাওয়া গেছে। সন্দেহভাজনদের তালিকায় খোকন মাহতোর নাম রয়েছে ২৮৪ নম্বরে। এই নির্দেশ আসার পর থেকে মন্ত্রীর ভাই নিখোঁজ। সকাল থেকে তার গ্রামের বাড়ি তালাবদ্ধ। প্রতিবেশীদের দাবী, সপ্তাহান্তে খোকন গ্রামের বাড়িতে যেতেন। শুক্রবার রাতে তিনি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গ্রামে এসেছিলেন, তবে শনিবার সকাল থেকে এলাকায় দেখা যায়নি। অন্যদিকে মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।মন্ত্রীর ভাই এখন কোথায়, চাকরি পেলেন কীভাবে? গ্রামবাসীর মনে এই প্রশ্ন।
হাইকোর্টের নির্দেশে যাদের চাকরি চলে যাচ্ছে এতে বিজেপি নেতা দুলাল চন্দ্র বারের মেয়ে বৈশাখীর নামও রয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, দুলাল বার বাগদা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি পরাজিত হলেও পরে বিজেপিতে যোগ দেন। এখন কেলেঙ্কারিতে তার নিজের মেয়ের চাকরি বাতিল হয়েছে। দুলাল চন্দ্র বলছেন আমার মেয়ের চাকরি বৈধ এবং কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা গোপাল চক্রবর্তী বলেছেন চন্দন মণ্ডল সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়েছেন, তার সঙ্গে দুলাল চন্দ্রের পুরনো সম্পর্ক রয়েছে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর এবং শহর সভাপতি অমিত সাহাও চাকরি হারিয়েছেন তাদের মধ্যে। তিনি হাটুগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। চাকরিও হারিয়েছেন তিনি। একইভাবে কোচবিহার মাথাভাঙ্গা ব্লকের দুই নম্বর যুব তৃণমূল সহ-সভাপতি মদন বর্মণও চাকরি হারিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment