নিজের ওয়ার্ডেই বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বৃহস্পতিবার তার বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। অভিযোগ, এলাকায় পুর পরিষেবা নেই। তাই বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। যদিও নিরাপত্তারক্ষীদের তৎপরতায় সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
এই প্রসঙ্গে এলাকার সাধারণ মানুষরা জানান, আমরা পরিষেবা পাই না। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নিকাশী নালার অবস্থা খুবই খারাপ, পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে। অভিযোগ, বারবার কাউন্সিলরকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। তাদের কথায়, আগামীকাল থেকে রমজান মাস মানে রোজার দিন পড়ে গেল তাই এলাকার লোকজন মিলে কাউন্সিলর কাছে গিয়েছিলেন অভিযোগ জানাতে। কিন্তু অভিযোগ, উল্টো কাউন্সিলার তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে তাড়িয়ে দেন।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, 'কিছু অসামাজিক লোক এই ঘটনা ঘটিয়েছে।' যারা সমাজ বিরোধী তারা আজকে এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে এবং এলাকায় উন্নয়ন তারা সহ্য করতে পারছে না তাই সন্ত্রাস করার একটা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, বলে পাল্টা অভিযোগ রবির। তিনি বলেন, রমজান মাস চলছে, কেউ কেউ বিভ্রান্তি ঘটাতে এবং প্ল্যান করে পুরসভার বদনাম করতে চাইছে।' ফারুক নামের একজন তাঁর দলবল নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি।
অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দা এম.ডি ফারুক বলেন, 'আট নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রবীন্দ্র বাবুকে আমরা দুঃখ-কষ্টের কথা জানাতে যাই। ড্রেন, রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নেই। নোংরা আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। জলের পাইপ ফেটে গিয়েছে, এসব যেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয়, বলতে যাই। এসব বলায় উনি গাড়ি থেকে নেমে আমাদের উল্টোপাল্টা বলতে শুরু করেন।'
তিনি বলেন, 'এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই। উনি আমাদের কাউন্সিলর আমাদের প্রতিনিধি, ওনাকে সমস্যার কথা না বললে কাকে বলব! কিন্তু উনাকে বলতে গেলে উনি পাল্টা আমাদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন, গালিগালাজ করেন, আমাদের দুষ্কৃতী তকমা দেন।'
এই প্রসঙ্গে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, 'প্রাকতত্ত্ব এবং উন্নয়ন মন্ত্রী ও বিধায়ক এবং কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান এতগুলো দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও এলাকার মানুষ আজ তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন, এরকম ঘটনা তৃণমূলের আরও কোনও মন্ত্রী বা দায়িত্বে বা পদে থাকা কাউকে দেখিয়েছে কিনা সন্দেহ রয়েছে। নিজের ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তাহলে পৌরসভার কি ধরণের উন্নয়নের কাজ হয়েছে, এতেই বোঝা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, 'কিছুদিন আগেও ব্যবসায়ী সমিতির সাথে একটি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। আর আজ তাঁর বাড়ির সামনেই বিক্ষোভ তাকে ঘিরে। আগামী দিনে তৃণমূল নেতা- নেত্রীরা রাস্তায় বের হতে পারবেন না।'
No comments:
Post a Comment