শিশুকন্যাকে নৃশংস খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র তিলজলায়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। বালিগঞ্জ স্টেশনে রেল অবরোধ করা হয়। রেল অবরোধের জেরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবী, তিলজলা থানা এলাকায় ভাঙচুরের অভিযোগে রবিবার রাতে গ্রেফতার হওয়া তিনজনকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। স্থানীয় সূত্রে খবর, গ্রেফতার তিনজনের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন।
এলাকাবাসীর দাবী অবিলম্বে ওই তিনজনকে মুক্তি দিতে হবে। স্থানীয় তিনজনকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত এই জ্যাম চলবে বলেও হুমকি। পাশাপাশি অভিযুক্ত অলোক কুমারকে তাদের হাতে তুলে দেওয়ারও দাবী জানান স্থানীয় লোকজন।
এর আগে সোমবার সকালে তিলজলার স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। নিহত শিশুর স্বজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকেই এতে সামিল হন। পিকনিক গার্ডেন-হাওড়া সড়কে একটি বাস থামিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তাদের বুকে পোস্টার নিয়ে স্লোগান দিতেও দেখা যায়। অনেকে রাজপথে বসে বিক্ষোভে যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের দাবী, শিশু কন্যার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। শিশুকন্যার মৃত্যুর জেরে এদিন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তিনজলায়। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে এলের দমকলের গাড়ি লক্ষ্য করেও হয় ইট বৃষ্টি। তিনজলা উড়ালপুলে সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাইকে আগুন ধরিয়ে দেন মানুষ, পুলিশকে লক্ষ্য করেও ছোঁড়া হয় পাথর।
\
বিজেপি নেতা অমিত মালভিয়া ট্যুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে নিশানা করেছেন এবং অভিযোগ করেছেন যে বাংলা সরকার কতদিন মেয়ে শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে নীরব থাকবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
বিক্ষোভকারীরা পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন। রবিবার রাতেও তিলজলা থানায় বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় লোকজন। রবিবার সকাল থেকে ওই শিশুকন্যা নিখোঁজের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবী, পুলিশ ব্যবস্থা নিলে শিশুটিকে বাঁচানো যেত। রবিবার রাতে তিলজলা থানাকে লক্ষ্য করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশ এলাকা খালি করার জন্য লাঠিচার্জ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। এ সময় স্থানীয় তিনজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, রবিবার দুপুর ১২টার দিকে অভিযোগ পাওয়ার পর শিশুটির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়। বাসভবনের ৩২টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায়। অলোকের ফ্ল্যাট বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। সন্ধ্যায় সেখান থেকে শিশুটির দেহ উদ্ধার করা হয়।
তিলজলা শিশু যৌন নির্যাতন ও হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত অলোক কুমারকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিঃসন্তান অলোক সন্তান লাভের আশায় তান্ত্রিকের কথা শুনে সাত বছরের শিশুকে খুন করে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত নিজেই একথা জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, তান্ত্রিককে ধরতে কলকাতা পুলিশের একটি দল পাঠানো হতে পারে বিহারে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, নিহত সাত বছরের শিশুকে মাথায় স্ক্রু ড্রাইভার জাতীয় কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়, এরপর হাত-পা বেঁধে বস্তায় আটকে রাখা হয়।
No comments:
Post a Comment