আদালত শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির মামলায় ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এবং ৫ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতে শুনানির সময় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকরা জানান, "প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সবার ওস্তাদ। এরা সবাই তার শিষ্য, যদিও শান্তনু বন্দোপাধ্যায় বলেছিলেন যে তিনি নির্দোষ। এ ক্ষেত্রে দায়ী কে। কারও নাম প্রকাশ না করলেও তদন্তে সবই সামনে আসবে।"
ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় দাবী করেছিলেন যে তিনি তাপসকে কখনও দেখেননি। শান্তনুর অধিগ্রহণকৃত জমি ও সম্পত্তি তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে।
ইডি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ও ২০১৪ টেট দুর্নীতিতে জড়িত। ২০১২ সালের টেট অ্যাডমিট কার্ড শান্তনুর কাছ থেকে পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবী করেন, কেন তার কাছে নথি ছিল তা তার মনে নেই। ইডি আধিকারিকরা তাঁর মোবাইল আইফোন থেকে প্রাপ্ত প্রবেশপত্রটি পেয়েছিলেন। এমন অনেক কোম্পানির হদিস পাওয়া গেছে যেগুলোর মাধ্যমে বড় লেনদেন হয়েছে। কোম্পানির ডামি অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তর করা হয় বা সম্পত্তি কেনা হয়। মানিক ভট্টাচার্য এবং পার্থর মতো অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে তার সম্পর্ক ছিল। হুগলিতে ইভান কনট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের নামে তাঁর নামে ৪১ ডেসিবেলের একটি ফার্ম হাউস পাওয়া গেছে। দুর্নীতির টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে।
ইডি আধিকারিকরা বেনামে সম্পত্তি কিনেছিলেন শান্তনু বাবাঞ্জির কর্মচারী এবং পরিচিতদের মাধ্যমে। স্ত্রী কোম্পানির নামে সম্পত্তি কিনেছেন। স্ত্রীর নাম সামনে রেখে সব কাজকর্ম সামলাতেন শান্তনু। কালীঘাটের কাকা (সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র) নিয়োগের মামলায় সংশোধনাগারে যাওয়া তৃণমূল যুব নেতা শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কার নির্মাণ সংস্থায় বিনিয়োগের কথা স্বীকার করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, “শান্তনু আমাকে বলেছিল, ‘আমরা একটা জায়গার উন্নয়ন করছি। তার প্রস্তাবে আমি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ৪০ লাখ টাকায় ১২০০ বর্গফুটের একটি প্লট কিনেছি। আমার উদ্দেশ্য ছিল ধাবা বা রেস্টুরেন্ট চালানো। বৃহস্পতিবার প্রিয়াঙ্কার নির্মাণ সংস্থার ব্যালেন্স শীট প্রকাশ্যে আসে। এতে দেখা যায়, হুগলির চন্দননগরে সত্যপীরের নীচে বহুতল ভবন তৈরি করছে নির্মাণ সংস্থা। যার অন্যতম সঙ্গী শান্তনুর স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা।"
No comments:
Post a Comment