রিলস বানাতে নদীতে ঝাঁপ তিন বন্ধুর, মৃত ১
প্রেসকার্ড নিউজ ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ এপ্রিল: রিল বানানো এখন আর শখ নয় বরং এখন নেশায় পরিণত হয়েছে। আর এই নেশা যুবসমাজকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনই একটি ঘটনা সামনে এসেছে উত্তরপ্রদেশের বাস্তি জেলা থেকে, যেখানে কয়েকজন বন্ধু ডেয়ারিং রিলস তৈরি করে ইনস্টাগ্রামে আপলোড করতেন। ধীরে ধীরে রিল বানানোর নেশাই হয়ে উঠল মৃত্যুর কারণ।
বাস্তির সোনহা থানা এলাকায় বসবাসকারী তিন কিশোর প্রায়ই তাদের রিলস বানিয়ে সোশ্যাল সাইটে আপলোড করতেন। রিলগুলিও যেমন-তেমন ছিল না, তবে তারা নিজেদের সাহসী প্রমাণ করার জন্য ডেয়ারিং রিল তৈরি করতেন। আর এটাই তাঁদের জন্য কাল হয়ে উঠল। উল্লেখ্য, তিন কিশোর রিল তৈরির জন্য নদীতে স্টান্ট করছিলেন, তখনই তারা বিপাকে পড়েন, তিনজনই নদীর স্রোতে ডুবতে থাকে। তাদের ডুবে যেতে দেখে রিল নির্মাতা তার দুই বন্ধুকে নিরাপদে নদী থেকে বের করে আনলেও প্রাণ হারাতে হয় তৃতীয় যুবককে।
সোনাহা থানার কারমাহিয়ায় অবস্থিত কুয়ানো নদীর বাধু ঘাটে রিল তৈরি করতে গিয়ে নদীতে ডুবে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। যিনি রিলটি তৈরি করছিলেন তিনি অন্য একজনের সহায়তায় ডুবে যাওয়া তিন বন্ধুর মধ্যে দুজনকে বাঁচান। কিন্তু তৃতীয় জনকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার পর গ্রামবাসী সোনহা থানায় খবর দেয়। ঘটনার খবর পেয়ে ডুবুরিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে কিশোরকে নদী থেকে উদ্ধার করে। পরিবারের লোকজন তাকে দ্রুত সিএইচসিতে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোনহা থানা এলাকার সাদুল্লাহপুরে বসবাসকারী কিশোর ঘনশ্যাম মৌর্য সেলিম, আরবাজ ও আব্দুলাহকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। রিল তৈরির নেশায় তারা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় নিজ গ্রাম থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে কুয়ানো নদীর কারমাহিয়ায় অবস্থিত বধু ঘাটে পৌঁছান। ঘনশ্যাম, আরবাজ ও আব্দুলাহ নদীতে ঝাঁপ দেন। সেলিম মোবাইল থেকে ভিডিও করছিলেন। হঠাৎ তিনজনই নদীতে ডুবে যেতে থাকেন। তিনজনকেই ডুবতে দেখে সেলিম নদীতে ঝাঁপ দেন এবং অপর এক ব্যক্তির সহায়তায় তার দুই সঙ্গী আরবাজ ও আবদুল্লাহকে বাঁচান। ঘনশ্যাম মৌর্য নদীতে তলিয়ে গিয়েছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পরিবার ও পুলিশ। স্থানীয় গ্রামবাসী ও ডুবুরিরা নদীতে নামেন। দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর রাত আড়াইটার দিকে ঘনশ্যাম মৌর্যকে নদী থেকে বের করা হয়। পুলিশ ঘনশ্যামকে নিয়ে সিএইচসি ভানপুরে পৌঁছালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পঞ্চনামা পূরণ করে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনা প্রসঙ্গে এএসপি দীপেন্দ্র চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানান, ভিডিও করতে চার জন নদীর ধারে গিয়েছিল, সবাই জলে পড়ে যায় এবং জলে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়। ডুবুরিরা তার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এতে কোনও অপরাধমূলক ঘটনা প্রকাশ্যে আসেনি, অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
No comments:
Post a Comment