বেড়াতে গেলে আমরা হোটেলের সব সুবিধে ভোগ করি। কিন্তু বিশ্বে এমন কিছু হোটেল আছে যাতে রুম আছে ১০,০০০টি। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হল কেউ কখনও থাকেননি এখানে। কিন্তু কেন, আর কোন দেশে রয়েছে এই হোটেল? চলুন তবে জেনে নেই-
জার্মানির বাল্টিক সাগরের রুজেন দ্বীপে রয়েছে এমন একটি হোটেল , যেটি ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হয়ে রয়েছে জনশূন্য। তবে জেনে অবাক হবেন যে এই হোটেলে ১০,০০০টি কক্ষ রয়েছে, কিন্তু তার চেয়েও আশ্চর্যের বিষয় হল আজ পর্যন্ত এই হোটেলে কেউ কখনও থাকেননি।
এই হোটেলটি ১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। তখন জার্মানি শাসন করতো হিটলার ও তার নাৎসী বাহিনী। নাৎসীরা স্ট্রেংথ থ্রু জয় কর্মসূচির আওতায় এই হোটেলটি তৈরি করেছিল। প্রায় ৯০০০জন শ্রমিক এই হোটেল তৈরিতে নিয়োজিত ছিলেন।
এর নাম হোটেল দা প্রোরা। এই নাম দেওয়ার পেছনে একটি কারণ ছিল। আসলে, এই হোটেলটি দেখতে একটি স্মৃতিস্তম্ভের মতো। প্রোরা মানে ঝোপঝাড় বা অনুর্বর জমি। সমুদ্রের বালুকাময় সৈকত থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দূরে এই হোটেলটি তৈরি করা হয়েছিল।
হোটেল দা প্রোরা আটটি আবাসন ব্লকে বিভক্ত এবং এটি প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। এতে সিনেমা হল ও ফেস্টিভ্যাল হল থেকে শুরু করে সুইমিং পুলও নির্মাণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একটি বিশেষ বিষয় হল এখানে একটি ক্রুজ জাহাজও স্বাচ্ছন্দ্যে দাঁড়াতে পারে।
হোটেলটি নির্মাণাধীন ছিল কিন্তু সম্পন্ন হওয়ার আগেই ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এর নির্মাণ বন্ধ হয়ে যায় এবং সমস্ত শ্রমিককে হিটলারের যুদ্ধ কারখানায় কাজ করতে পাঠানো হয়। ১৯৪৫ সালে যুদ্ধ শেষ হলেও এই হোটেলের দিকে কারও নজর পড়েনি আর। এবং এখন এই হোটেলটি প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বলা হয়, এটি সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হলে এটিই হতো বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং সেরা হোটেল।
No comments:
Post a Comment