মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নীতে অবস্থিত মহাকালেশ্বর মন্দিরটি খুবই বিখ্যাত । এখানে অনুষ্ঠিত ভস্ম আরতি ভক্তদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে।
প্রতিনিয়ত ভস্ম আরতি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে । অলংকরণ আকারে করা এই আরতির রয়েছে প্রাচীন তাৎপর্য । সারা দেশে বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে 'মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ'-এর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
এই মন্দিরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ম হল শুধুমাত্র পুরুষরাই এখানে ভস্ম আরতি দেখতে পারেন। আরতির সময় মহিলাদের মহাকাল বাবার কাছে যাওয়ার নিষেধ রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন মহিলাদের এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ -
ধর্মীয় বিশ্বাস ও পৌরাণিক কাহিনী মতে, কথিত আছে বহু বছর আগে উজ্জয়নীতে দুষণ নামে এক রাক্ষস ছিল যে সেখানকার প্রজা ও রাজার ওপর অত্যাচার করত। তার ওপর বিরক্ত হয়ে লোকেরা মহাদেবের আরাধনা করে।
এরপর মহাদেব স্বয়ং তখন পূজো গ্রহণ করে সেই অসুরকে বধ করেছিলেন। অতঃপর তিনি অসুরের ছাই দিয়ে নিজেকে সজ্জিত করেন সেই থেকে এই স্থানের নাম হয় মহাকালেশ্বর। তখন থেকেই এখানে বাবার ভস্ম আরতি শুরু হয়।
ভগবান শিবকে আরতিতে ভস্ম হিসাবে শ্মশানে পোড়ানো মৃতদেহের চিতার ছাই দিয়ে সাজানো করা হয়। তবে এর বাইরে গোবর, পিপল, পলাশ, শামি ও বেরের কাঠ একসঙ্গে পোড়ানো হয়। আরতিতেও একত্রিত ভস্ম ব্যবহৃত হয়। এমনটা বিশ্বাস করা হয় যে, যাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় মহাদেব সজ্জিত হন তিনি মোক্ষ লাভ করেন।
কেন নারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা?
আগে ভস্ম আরতির সময় মেয়েরা ঘোমটা দিয়ে থাকতেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে সেই সময় ভগবান শিব নিরাকার রূপে ছিলেন, তাই মহিলারা মহাদেবের সেই রূপ দেখতে পারেন না।
মহাকালেশ্বরে প্রতি বছর শিবরাত্রি অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালিত হয়। দেশ ও বিদেশ থেকে লোকেরা বিশেষভাবে এখানে আসেন ভস্ম আরতি দেখতে। তবে এবার আরতি ছাড়াও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে মহাকালেশ্বর মন্দির। এবার মহাশিবরাত্রি উপলক্ষে ২১ লক্ষ প্রদীপ জ্বালানোর বিশ্ব রেকর্ড হবে।
No comments:
Post a Comment