ভারতকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলার চেষ্টায় থাকা চীনের আরও একটি কীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে। ভারতের প্রতিবেশী দেশ নেপালে চার লেনের সড়ক নির্মাণ করছে চীন। উন্নয়নের নামে শুরু হওয়া এই অবকাঠামো-কাজ ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়, কারণ এই রাস্তাটি বিহারের সীমান্ত এলাকায় পৌঁছে যাবে এবং পরে এটি ব্যবহার ভারতের বিরুদ্ধে করা যেতে পারে।
ভারতের কাছাকাছি সব এলাকায় চীনের পরিকাঠামোগত কাজের ওপর নজর রাখছে ভারতীয় সংস্থাগুলো। দেশের সশস্ত্র সীমা বল (SSB) সীমান্ত এলাকায় প্রযুক্তিগত মনিটরিং উন্নত করতে শুরু করেছে। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ভারতের সঙ্গে নেপালের খোলা সীমান্ত চীনের তৎপরতার শিকার হতে পারে। সেখান থেকে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, শুধুমাত্র বিহার রাজ্য থেকে নেপালের ৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা সীমান্ত রয়েছে। এত লম্বা সীমান্তের নিরাপত্তা খুবই কঠিন কাজ, বিশেষ করে এই সীমান্ত প্রশস্ত হওয়ার কারণে।
চীনের দখলদারির কারণে নেপাল ভারতকে তার ভূমি হাতানোর অভিযোগ এনেছিল। প্রায় ৫ মাস আগে ভারত তার এলাকায় (সীতামারহি) একটি রাস্তা তৈরি করছিল, যা নির্মাণ বন্ধ করে দেয় নেপালি নিরাপত্তা বাহিনী। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল 'নো ম্যানস ল্যান্ড' বিতর্ক।
জানা গিয়েছে, শীঘ্রই ভারত-নেপাল খোলা সীমান্তের সংবেদনশীল অংশে প্রচুর সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা এবং লাইট বসানো হবে। সশস্ত্র সীমা বল (SSB) ডেটা বেস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা আরও জোরদার করার পরিকল্পনা করেছে৷ ড্রোনও মোতায়েন করা হবে। চীনা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে রেডিওর মাধ্যমেও সাহায্য নেওয়া হতে পারে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাপস গত বছর নেপালে চীনের নির্মাণকাজ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল। প্রতিবেদনে নেপালের মুস্তাং এলাকার উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে চীন একটি সড়ক নির্মাণ করছে। নেপালের এমন অনেক এলাকা রয়েছে, যেখানে এখন পর্যন্ত চীনা কোম্পানিগুলো রাস্তা নির্মাণের কাজ করেছে। চীনের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে, কারণ চীন থেকে নেপাল যাওয়ার রাস্তাটি সরাসরি ভারত ও নেপালের সড়কের সাথে সংযোগ স্থাপন করছে।
নেপালে চীনের ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপের প্রভাবে নেপালি মিডিয়া ও রেডিওকে ভারতবিরোধী প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। বলা হয়, নেপালি মিডিয়া ও রেডিওর মাধ্যমে নেপালে ভারতবিরোধী প্রচারণায় বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করে ইন্ধন জুগিয়েছে চীন।
এসএসবি ডিআইজি এসকে সারঙ্গির কথায়, নেপাল ও ভারতের মধ্যে 'রোটি-বেটি'-র সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা চলছে। ভারতীয় সীমান্তেও কিছু এফএম স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে নেপাল-ভারত বন্ধুত্ব বৃদ্ধি করে, এমন প্রচারমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
No comments:
Post a Comment