জগন্নাথ দেবের স্বপ্নাদেশ! চন্দন উৎসবের মধ্যে দিয়ে শুভারম্ভ হল মাহেশের রথযাত্রার
নিজস্ব সংবাদদাতা, হুগলি, ২৩ এপ্রিল: মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের রথ যাত্রার শুভারম্ভ হয় অক্ষয় তৃতীয়ার দিন৷ এবারও সেই নিয়মের অন্যথা হল না৷ আজ রবিবার, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সকাল থেকেই মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছেন মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরে৷ এদিন 'চন্দন উৎসবে'র মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে গেল রথ যাত্রা৷ তবে, এখনও প্রায় দু মাস বাকি মূল উৎসবের৷
অক্ষয় তৃতীয়ার দিন হুগলির মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের জগন্নাথ বলরাম এবং সুভদ্রার কপালে চন্দন পরানো হয়৷ তার জন্য আগের দিন রাত থেকেই চন্দন বাঁটতে শুরু করেন এলাকার মহিলারা। চন্দন বাঁটা হয়ে গেলে সেই চন্দনকে একটি বিশেষ কাপড়ের মধ্যে রাখা হয়। কাপড়ের ওই পট্টি অক্ষয় তৃতীয়ার দিন জগন্নাথ দেবের কপালে লাগানো হয়।
চন্দন যাত্রা অনুষ্ঠান শেষে মাহেশ জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত পিয়াল অধিকারী বলেন, "আজ থেকে শুরু হল চন্দন যাত্রা উৎসব। আজকের পর থেকে টানা ২১ দিন ধরে চলবে এই চন্দন যাত্রা উৎসব। আজ থেকে ঠিক ৫৮ দিন বাদে মহেশের রথের চাকা গড়াবে। আবারও ভক্তবৃন্দদের ঢল নামবে মহাপ্রভু জগন্নাথের রথের টান দেওয়ার জন্য।"
কথিত আছে, অক্ষয় তৃতীয়ার দিন নাকি জগন্নাথ দেব রাজা ইন্দ্রচন্দ্রকে স্বপ্নাদেশ দিয়েছিলেন, তাঁর সারা গায়ে চন্দনের প্রলেপ দেওয়ার। সেই থেকেই প্রতি বছর এই দিনে পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের মতো, হুগলির মাহেশের জগন্নাথ মন্দিরের জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে কপালে চন্দনের পট্টি পড়ানো হয়।
কথানুযায়ী, রাজা ইন্দ্রচন্দ্রকে জগন্নাথ দেব স্বপ্নাদেশ দিয়ে বলেন, 'গরম থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তাঁকে চন্দন মাখিয়ে দিতে। এর ঠিক ৪২ দিন বাদে রাজার কাছে আবার স্বপ্নাদেশ আসে এবং ঠাকুর বলেন, চন্দনের জন্য তার মাথা ধরে গেছে, তাই তাকে স্নান করাতে হবে। ঠাকুরের আদেশ অনুযায়ী রাজা ১০৮ টি কলসির জল দিয়ে জগন্নাথ দেবকে স্নান করান। সেই থেকেই চন্দন যাত্রার ৪৫ দিন বাদে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা উৎসব পালন হয়।
এই স্নানের পরে ঠাকুরের নাকি খুব জ্বর আসে। সেজন্য স্নান যাত্রার পর ১২ দিন ঠাকুরকে গর্ভগৃহে নিভৃত বাসে রাখা হয়। ১২ দিনের মধ্যে জগন্নাথ দেব সুস্থ হয়ে ওঠেন, তারপর তাঁকে নিয়ে শুরু হয় রথযাত্রা।
No comments:
Post a Comment