ভগবান বিষ্ণুর ১০টি অবতারের মধ্যে একটি হল ভগবান বরাহের অবতার। ভগবান বিষ্ণুর ১০টি অবতারের মধ্যে এটি তৃতীয় অবতার। বরুথিনী একাদশীর দিন ভগবানের বরাহ অবতারের পূজা করা হয়। এবার বরুথিনী একাদশী ৩০শে এপ্রিল। একে ভারুথিনি গায়ারসও বলা হয়। বরুথিনী একাদশীর দিন ভগবান বরাহের পূজা করলে এবং তাঁর জন্মের গল্প শুনলে অনেক পুণ্য লাভ হয়। অসুরদের বিনাশ করার জন্য ভগবান বিষ্ণুর বরাহের অবতারের জন্ম হয়েছিল।
দারোয়ানদের রাক্ষস হতে হয়েছে
ভগবানের বরাহের অবতার সম্পর্কে কিংবদন্তি অনুসারে সাতজন ঋষি একের পর এক বৈকুণ্ঠে যাচ্ছিলেন। তখন বৈকুণ্ঠ লোকের দারোয়ান জয় ও বিজয় সাত ঋষিকে দ্বারে থামিয়ে দিয়েছিলেন। এতে সাতজন ঋষি ক্ষুব্ধ হন এবং উভয় দারোয়ানকে অভিশাপ দেন যে তারা তিন জন্ম পৃথিবীতে থাকবে এবং রাক্ষস হয়ে থাকবে। অভিশাপের প্রভাবে দারোয়ান জয় ও বিজয় উভয়েই রাক্ষস হয়ে উঠলে তারা পৃথিবীবাসীকে কষ্ট দিতে থাকে। তারা যজ্ঞ-অনুষ্ঠানে মানুষকে বাধা দিত। এই অসুরদের নাম ছিল হিরণ্যকশিপু ও হিরণ্যক্ষ। এই রাক্ষসদের অত্যাচারে মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
অতঃপর ভগবান বরাহ এভাবে আবির্ভূত হলেন
একবার হিরণ্যক্ষ ঘোরাঘুরি করতে করতে পাতাল লোকের বরুণ নগরে পৌঁছে যান এবং বরুণ দেবকে যুদ্ধের জন্য চ্যালেঞ্জ করেন। তখন বরুণ দেব বললেন, 'আমার এখন লড়াই করার ইচ্ছা নেই, তোমার মতো শক্তিশালী লোকের সঙ্গে লড়াই করার সামর্থও নেই। তাই বিষ্ণুজীর সাথে যুদ্ধ করাই ভালো। এরপর সকল দেবতা মিলে ব্রহ্মাজীর কাছে হিরণ্যক্ষের হাত থেকে মুক্তির প্রার্থনা করলেন। ভগবান বিষ্ণুর ধ্যান করার সময় ব্রহ্মাজি তাঁর নাসারন্ধ্র থেকে বরাহ নারায়ণের জন্ম দেন। এইভাবে ব্রহ্মার নাসিকা থেকে বিষ্ণুর তৃতীয় অবতার বরাহ অবতারের জন্ম হয়।
এর পর বরুণ দেব দেবর্ষি নারদকে ভগবান বিষ্ণুর ঠিকানা জিজ্ঞেস করলেন এবং দেবর্ষি নারদ বললেন যে শ্রী হরি সাগর থেকে পৃথিবী বের করার জন্য বরাহের অবতার গ্রহন করেছেন। তারপর বরুণ দেবও সেখানে পৌঁছে গেলেন এবং হিরণ্যক্ষও সেখানে পৌঁছে গেলেন। রাক্ষস হিরণ্যক্ষ ভগবান বরাহকে লড়াইয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। এর পর ভগবান বরাহ ও হিরণ্যক্ষের মধ্যে প্রবল যুদ্ধ হয়। অতঃপর ভগবান বিষ্ণুর বরাহের অবতার হিরণ্যক্ষের পেট দাঁত ও চোয়াল দিয়ে ছিঁড়ে পৃথিবীকে তার জায়গায় ফিরিয়ে দেন।
No comments:
Post a Comment