তীব্র জল-কষ্ট, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় কলসি-বালতি রেখে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday, 20 April 2023

তীব্র জল-কষ্ট, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় কলসি-বালতি রেখে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর



তীব্র জল-কষ্ট, প্রচণ্ড গরমে রাস্তায় কলসি-বালতি রেখে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর 


নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ২০ এপ্রিল: তীব্র গরমে জ্বলছে বাংলা। দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরেও মালদা জেলাতেও একই দশা। বিগত দুই দিনে সর্বাধিক তাপমাত্রা ছুঁয়েছে প্রায় ৪৩°সেলসিয়াস পর্যন্ত। গরমে হাঁসফাঁস করছেন সকলেই। এরই মাঝে এলাকায় ব্যাপক জলকষ্ট। জলের জন্য হাহাকার করছে সমগ্র এলাকা। গ্রামে নেই পিএইচই, নেই কোনও সাবমার্সিবল পাম্প। জলস্তর নেমে যাওয়ার ফলে নলকূপগুলো থেকে উঠছে না জল। গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহের মাঝেই এবার জলের দাবীতে রাস্তায় মগ, বালতি রেখে বিক্ষোভ এলাকাবাসীর। প্রশ্নের মুখের সরকার এবং প্রশাসনের ভূমিকা। 



শাসকদলের অন্দরের কাজিয়ার ফলেই গ্রামে বসেনি পিএইচই, বিস্ফোরক অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। মানুষের জন্য নূন্যতম পরিষেবা দিতে ব্যর্থ মানুষ এদের নর্দমায় ছুড়ে ফেলবে শাসকদলকে নিশানা সিপিআইএমের। জল কষ্টের কথা মেনে নিল প্রশাসন। সাফাই তৃণমূলের। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।



মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত আঙ্গারমুণি, বড়ল বাজার সহ একাধিক এলাকায় তীব্র জল কষ্ট। বৃহস্পতিবার জলের দাবীতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখালেন আঙ্গারমুণির সাধারণ মানুষ। বিক্ষোভের সামনের সারিতে গ্রামের মহিলারা। বালতি, কলসি রাস্তায় রেখে জলের দাবীতে বিক্ষোভ। জলের অভাবে প্রচণ্ড কষ্ট পাচ্ছে শিশুরা। গবাদী পশুদের স্নান করানোর জল নেই। নিত্যদিনের কাজের জল নেই। অভাব পানীয় জলেরও। এই মুহূর্তে চলছে রমজান মাস। রোজার মাঝে জলকষ্টের ফলে নাজেহাল এলাকাবাসী। গ্রামে নেই কোনও পিএইচই, এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বসানো হয়নি সাবমার্সিবল পাম্প। ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম।বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে ৮ থেকে ৮০ সকলেই। 



এমনকি জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে এই এলাকায় পিএইচই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ, জমি নিয়ে জট তৈরি হয়; কোন জমিতে পিএইচই হবে এ নিয়ে শাসকদলের অন্দরে মতভেদ হয়। তার জেরেই এখন হয়নি পিএইচই। যার ফলে এই তীব্র গরমে ভুগতে হচ্ছে গ্রামবাসীকে। আর এই সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতোর। 


সিপিআইএমের অভিযোগ, শাসকদলের দুর্নীতির ফলে কোনও কাজ সঠিক ভাবে হয় নি। যে কোনও প্রকল্পের অর্ধেক টাকা আত্মসাৎ করেছে শাসক দলের নেতারা। আর এর জেরে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। যদিও তৃণমূলের সাফাই দাবদাহের ফলে সারা দেশ জুড়ে জলকষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে জল কষ্টের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক।


বিক্ষোভকারী বাসিন্দা নজিমুল হক বলেন, 'গবাদি পশুর স্নান করাতে সমস্যা তো হচ্ছেই। শিশুরাও খুব জল-কষ্টে ভুগছে। এদিকে শাসকদলের নিজেদের মতবিরোধের কারণেই এখানে পিএইচই হয়নি।'


বিক্ষোভকারী বাসিন্দা কোহিনুর বেওয়া বলেন, 'রোজার মধ্যে প্রচণ্ড জলকষ্ট। পিএইচই না থাকায় এখানে ট্যাপ কল নেই। নলকূপ থেকেও জল উঠছে না।'


বিক্ষোভকারী বাসিন্দা জাভেদা খাতুন বলেন, 'অন্যান্য এলাকায় ট্যাপ কল রয়েছে কিন্তু আমাদের এলাকাতে নেই। হাজার হাজার মানুষের বাস। পানীয় জল থেকে শুরু করে স্নানের জল প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। জলের দাবীতে আমরা বিক্ষোভ করছি।'


সিপিআইএমের জেলা কমিটির সদস্য শেখ খলিল বলেন, 'তৃণমূলে দুর্নীতি ছাড়া কোনও কাজ হয় না। প্রত্যেকটা প্রকল্পের টাকা এরা আত্মসাৎ করেছে। কলে প্রকল্প অনুযায়ী কোনও কাজ হয়নি। মানুষকে ফল ভুগতে হচ্ছে। মানুষ এদের নর্দমায় ছুঁড়ে ফেলবে।'


তুলসীহাটা অঞ্চল তৃণমূলের চেয়ারম্যান দিল রোজ বলেন, 'অনেক এলাকায় জলকষ্ট রয়েছে এটা ঠিক। কিন্তু এই দাবদাহে তো এটা সব জায়গার সমস্যা।' তাঁর প্রশ্ন, বিরোধীরা এতদিন কি করেছে?' তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেছে।


হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক অনির্বান বসু বলেন, 'জলকষ্ট তো হচ্ছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। বিভিন্ন জায়গায় জলছত্র খোলা হচ্ছে। ভ্রাম্যমান জলের ট্যাঙ্কি রয়েছে একটা।'


এদিকে কবে এই সমস্যা মিটবে, সেদিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী। 

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad