বয়স মাত্র ১২ বছর, আর এখন থেকেই নাসা-ইসরোর হয়ে কাজে ব্যস্ত মালদার রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা শৌর্য পাল। গ্রহাণু, সুপারনোভা হান্টিং এবং গ্যালাক্সি ক্লাসিফিকেশনের কাজে তুখোড় শৌর্য এখন মালদাবাসীর গর্ব। ঘরে বসেই মহাকাশের রহস্য সন্ধান চালাচ্ছে ১২ বছরের ছেলেটি৷ এক বছর ধরে মহাকাশ তার অবসরের সঙ্গী৷ ইতিমধ্যেই গ্রহাণু, নক্ষত্রপুঞ্জ ও সুপারনোভা শনাক্তকরণে সাফল্যও পেয়েছে সে৷ খুদে শৌর্য এখন নাসা কিংবা ইসরোর মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত নাম৷ বাবা-মা চাইছেন, ভবিষ্যতে ছেলের শখের সঙ্গে যেন পেটের কোনও সংঘর্ষ না বাধে৷ নিজের খুশিকে আঁকড়ে ধরেই অন্নসংস্থান হোক ছেলের৷
পুরো নাম শৌর্য পাল৷ বাড়ি মালদা শহরের রিজেন্ট পার্কে৷ শহরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শৌর্যের বাবা শুভেন্দু পাল ও মা অর্পিতা পাল৷ দু’জনেই প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করেন৷ ছোট্ট থেকেই তাঁদের একমাত্র ছেলের আকাশ দেখার নেশা৷ বয়স যত বেড়েছে, নেশা ততই জাপটে ধরেছে ছেলেকে৷ মহাকাশ নিয়ে বই, ইউটিউব চ্যানেল ঘেঁটে শেষ৷ ছেলের নেশাই তাঁদের খোঁজ দিয়েছে শোভন আচার্য নামে দিল্লিবাসী এক সিটিজেন সায়েন্টিস্টের৷
শোভন বাবুও মালদার ভূমিপুত্র৷ শৌর্যের নেশা দেখে তিনি তাকে ‘দ্য সিটিজেন সায়েন্টিস্ট’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অ্যাড করে নেন৷ ওই গ্রুপে গোটা বিশ্বের বহু মহাকাশ চর্চারত মানুষ রয়েছেন৷ সেখান থেকেই শৌর্য মহাকাশ নিয়ে আরও জানে৷ পরবর্তীতে সে আইএএসসি নামে একটি বিদেশি সংস্থায় যোগ দেয়৷ এই সংস্থার সহকারী সংস্থা নাসা৷ আইএএসসি সংস্থার হয়েই মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য গ্রহাণু, নক্ষত্রপুঞ্জ এবং সুপারনোভার অবস্থান চিহ্নিত করার প্রাথমিক কাজটি করে সে৷
শৌর্যের পরিবার সূত্রে জানা যায়, চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময় নাসা কিডসে বিশ্বব্যাপী অঙ্কন প্রতিযোগিতায় সে অংশ নিয়েছিল। সেখানে সেরা বারোটি ছবির মধ্যে নির্বাচিত হয় তাঁর ছবি, তা নাসার তরফে প্রকাশিত হয়েছিল। পরবর্তীতে নাসার একাধিক প্রজেক্টেও সে কাজ করেছে বলে, তার বাবা জানান।
তার বাবারও জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই মহাজাগতিক বিষয় নিয়ে শৌর্যের ভীষণ আগ্রহ। আর তা দেখে তিনি তাকে সেই সংক্রান্ত অনেক বইও কিনে দিয়েছেন।
শৌর্যের কথায়, সে মহাকাশ দেখতে ভালোবাসে, ছোটবেলা থেকেই এটা তার অভ্যাস। সে বলে, 'আকাশ আমাকে টানে, সেই কারণে আমি টেলিস্কোপ কিনতে চাই। সিটিজেন সাইন্টিস্ট নামের একটি গ্রুপের সঙ্গেও আমি যুক্ত। সেখানে আমরা গ্রহাণু সনাক্তকরণের কাজও করি।'
No comments:
Post a Comment