সমুদ্রের গভীরতা পরিমাপের কৌশল
পিঙ্কি রায়,৭মে : এই পৃথিবীর বেশিরভাগ অংশই মহাসাগর এবং সাগর দ্বারা বেষ্টিত। পৃথিবীর প্রায় ৭১ শতাংশে কেবল জল রয়েছে। তাই মহাকাশ থেকে আমাদের পৃথিবীর পুরো নীল দেখায় আর যার কারণে পৃথিবীকে নীল গ্রহও বলা হয়। এই সমুদ্র যেকোনো দেশের বাণিজ্যের উপর অনেক বড় প্রভাব ফেলে। সমুদ্র দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য অনেক বড় পরিসরে হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল সমুদ্রের গভীরতা কত? তা জানাও খুব জরুরি।
সমুদ্রগুলি মাঝখানে খুব গভীর। কিন্তু, সমুদ্রের গভীরতাও বিভিন্ন স্থানে পরিবর্তিত হয়। কিছু জায়গায় এটি খুব গভীর এবং অন্য জায়গায় এটি এতই অগভীর যে লোকেরা সেখানে স্নান করে। অগভীর গভীরতা সহজেই নির্ণয় করা যায়, কিন্তু কীভাবে এটি অধিক গভীরতায় পরিমাপ করা হয়? আসুন জেনে নেই-
প্রাচীনকালে সমুদ্রের এক জায়গায় গভীরতা মাপার জন্য তার ব্যবহার করা হত। জাহাজটি থেমে যেত এবং দড়ি বা তারের সঙ্গে একটি বোঝা বেঁধে সমুদ্রের তলদেশে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। তারপর পরে সমুদ্রের গভীরতা খুঁজে বের করা হয়। এটি একটি ধীর এবং বিরক্তিকর কাজ ছিল। এছাড়াও এটা সঠিক ছিল না।
সমুদ্রের গভীরতা মাপার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় তাকে ফ্যাথোমিটার বলে। এটি জাহাজে প্রয়োগ করা হয়।
ডিসকভারিওয়ার্ল্ড ওয়েবসাইট অনুসারে, এটি ২০,০০০ মেগাহার্টজের বেশি ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তরঙ্গ তৈরি করে। এগুলোকে বলা হয় অতিস্বনক তরঙ্গ। তার কান দিয়ে এই তরঙ্গ শুনতে পায় না। এই তরঙ্গগুলি সমুদ্রের তলদেশের দিকে অভিক্ষিপ্ত হয়। এই ঢেউগুলো যখন সমুদ্রের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসে তখন রিসিভারের সাহায্যে ধরা পড়ে। ভূপৃষ্ঠ থেকে সমুদ্রের তলদেশে এবং পেছনে যেতে তরঙ্গের মোট সময় পরিমাপ করা হয়।
সমুদ্রের জলে শব্দের বেগের সঙ্গে এর অর্ধেক সময়কে গুণ করলে ওই স্থানে সমুদ্রের গভীরতা জানা যায়। এভাবে যেকোনও স্থানে সমুদ্রের গভীরতা মাপা যায়। এই কৌশলটি 'ইকো সাউন্ডিং' বা 'ইকো রেঞ্জিং' নামেও পরিচিত। এই কৌশল থেকেই জানা গিয়েছে যে প্রশান্ত মহাসাগর হল গভীরতম মহাসাগর। প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা ৪,২৮২ মিটার।
No comments:
Post a Comment