'আমার নাম জপ করে বাঁচতে পারবেন না', চড়া আক্রমণে দিলীপ
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ২১ মে: 'আমি তো ভগবান নই যে আমার নাম নিলে বেঁচে যাবেন', অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষের। রবিবার নিউটাউন ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে আসেন বিজেপি নেতা। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্যের শাসক দলকে একের পর এক তোপ দাগেন তিনি।
সিবিআইয়ের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে এসে বলেন, তাঁর নবজোয়ার যাত্রাকে বন্ধ করার জন্য বিরোধীরা চক্রান্ত করেছে। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "ঝড়েই তো বন্ধ হয়ে গেছিল নবজোয়ার যাত্রা তখন তো কিছু বলেননি। উনি দুদিন রেস্ট পেয়ে গেলেন, ধন্যবাদ দিন সিবিআইকে। নব জোয়ার করুন না সারা বছর কি মানা করেছে। কিন্তু যখন উনি বলেছেন সহযোগিতা করবেন তাই সিবিআই ডেকেছে, সহযোগিতা করা উচিৎ, আবার উল্টোপাল্টা বলছেন কেন।"
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে বলেছেন প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে আপনার (দিলীপ ঘোষের) দলিল পাওয়া গেছে, সেই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ বলেন, "আমার নাম জপ করে বাঁচতে পারবেন না। আমি তো ভগবান নই যে আমার নাম নিলে বেঁচে যাবেন। যে যা করেছে তার জবাব দিতে হবে। কোর্টে গিয়ে দিতে হবে দিলীপ ঘোষকে যেদিন ডাকবে দিলীপ ঘোষ গিয়ে জবাব দেবে।"
কুন্তল ঘোষের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকা হয়েছে সেই জায়গা থেকে সুদীপ্ত সেনের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং শুভেন্দু অধিকারীকে ডাকা হচ্ছে না কেন? এই নিয়ে তিনি বলেন, "কে কাকে দিয়ে চিঠি লিখাচ্ছে, কেন লেখাচ্ছে এটা পাবলিকও জানে। যাকে চিঠি লিখতে চাপ দেওয়া হয়েছিল সেই মহিলাকে, তিনি বলেছেন সিআইডি এসে আমাকে ধমকাচ্ছে অমুকের নামে চিঠি লিখে দাও। অমুকের নামে কমপ্লেন করে দাও, এগুলো সব বানানো ব্যাপার। এগুলো সব বানানো ব্যাপার সিবিআইও জানে কে কোথায় আছে খালি তথ্য জোগাড় করছে তারপর সবার ওইখানে জায়গা হবে। সেই জন্য আপনি কাউকে দিয়ে চিঠি লিখে দেবেন তাকে ডেকে নেবে, সিবিআইকছ এত বোকা ভাবছেন কেন? মাটির তলা থেকে কুরে টাকা পয়সা বার করে দিচ্ছে বাকি সবও বের হবে।"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, না খাউঙ্গা না খানে দুঙ্গা, যদি তাই হয় গতকাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন নারদার প্রাইম একিউস্ট শুভেন্দু অধিকারী যাকে ভিডিওতে টাকা নিতে দেখা যাচ্ছে তিনি এখনও পর্যন্ত বাইরে রয়েছেন কেন? এই নিয়ে বিজেপি সাংসদ বলেন, "ওনার পার্টিতে আরও ৬ জন টাকা নিয়েছেন, সবাই কি ভেতরে গেছে? কেস চলছে, তদন্ত চলছে। যখন কোর্ট মনে করবে ভেতরে পাঠাবে, তাদের পুরো পার্টিটাই তো ভেতরে চলে যাবে।"
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার থেকে নব জোয়ার যাত্রা শুরু করবেন, তার দাবী আরও ১০ গুণ মানুষ হবে, সে প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, "উনি কি দাবী করছেন যায় আসে না। যাত্রা হচ্ছে না, মারপিট ঠিক হয়ে যাচ্ছে, এটা তো আমরা দেখলাম। কারা আছে, ওদের পার্টির গুন্ডারা নিজেরা মারামারি করছে সাধারণ মানুষের কোথায় সম্পর্ক, কেউ নেই সাধারণ মানুষ। কেউ দেখতেও যায় না।"
নিয়োগে পূর্ব মেদিনীপুরশুভেন্দু অধিকারীর জেলাতে বেশি দুর্নীতি হয়েছে, তাকে কেন ডাকা হচ্ছে না? অভিষেকের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "তথ্য প্রমাণ দিন না, চোরেরা কি বলল কি যায় আসে! অনেকে অনেক কিছু বলছে বাঁচার জন্য লোকেরা তদন্ত করার জন্য কোর্টে গেছেন। কোর্ট সিবিআই নির্দেশ দিয়েছে সিবিআই তথ্য নিয়ে আসে। যে কোনও লোকের নামে গিয়ে কমপ্লেন করতে পারেন। আমাদের নামেও কেউ কেউ কোর্টে গেছিল করেছে কি? চোখ মুখ দেখলেই বোঝা যায় যার বংশশুদ্ধ চোর, তারা বড় বড় কথা বলে কি করে!"
এর পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালে রোগী ভর্তি নিয়ে বিস্ফোরক মদন মিত্র, সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "ওগুলো ওদের পার্টির ভেতরের ব্যাপার সেই নিয়ে কিছু বলব না। এডমিস্টেশন নেই, দালালি চলছে। যে নেতা যেমন পাচ্ছে কাজ করে নিচ্ছে। কাজ আটকালেই গন্ডগোল। কোনও সিস্টেম নেই। সবাই নিজের মতো চালাচ্ছে। পার্টির উপরেও কোন কন্ট্রোল নেই। নেতারা জেল যাওয়ার থেকে বাঁচার জন্য চেষ্টায় কোর্ট কাচারি করতে করতে যাচ্ছে। পার্টি ডামাডোল, তার মধ্যে সমস্যা হচ্ছে, পুরনোরাও বুঝতে পারছে কোন ঠাসা হয়ে যাচ্ছি, তাই মাঝেমধ্যে এমন করে।"
No comments:
Post a Comment