পাঙাশ চাষের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
রিয়া ঘোষ, ১৩ মে : কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পাঙাশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে অনেকেই পাঙাশ পছন্দ করেন এবং অনেকেই করে না। কারণ এই মাছের গন্ধ অনেকেরই সহ্য হয় না। তবে দেশের প্রায় সব বাজারেই এর ব্যাপক উপস্থিতি দৃশ্যমান। এ ছাড়া জেলেদের মধ্যে এই মাছ খুবই জনপ্রিয়। কারণ, এই মাছে কাঁটা কম থাকে। সহজ খাদ্যের চাহিদা মেটাতে অনেকেই এই মাছ চাষে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছেন। এই মাছ চাষ করাও সহজ তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে।
পোনা সংগ্রহ
পুকুর তৈরি হওয়ার পর ভালো মানের মাছের পোনা সংগ্রহ করতে হবে। পোনাগুলি স্বাস্থ্যকর, পুষ্ট এবং তাজা হওয়া উচিৎ। তাদের মাথার সামনে প্রোবোসিসের উজ্জ্বলতা এবং অখণ্ডতা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ। এ জন্য নির্ভরযোগ্য হ্যাচারি থেকে পোনা কিনতে হবে। উচ্চ মানের পোনা সাবধানে সংগ্রহ করতে হবে। পোনা পরিবহনের সময় খেয়াল রাখতে হবে, পরিবহনের সময় যাতে কোনও ক্ষতি না হয়। পরিবহনের আগে, পোনাকে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার জন্য স্থির রাখতে হবে। পরিবহনের সময় পোনাকে অতিরিক্ত উত্তেজিত করা ঠিক নয়।
সতর্কতা
পুকুর পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে।
মজুদ করার আগে চুন লাগাতে হবে।
যারা মাছের পরিচর্যার দায়িত্বে থাকবেন তাদের অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
মাছ ধরা, পরিবহন, জাল ফেলা সহ সকল কাজে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ।
উন্নত পরিবেশ ও সুষম খাবার দিতে হবে।
অতিরিক্ত মাছ মজুদ এড়িয়ে চলুন।
খাদ্য এবং সেবা
চাষকৃত পুকুরে উৎপাদিত প্রাকৃতিক খাদ্য পাঙাশের জন্য পর্যাপ্ত নয়।
আশানুরূপ ফলনের জন্য সুষম খাদ্য দিতে হবে।
চাষাবাদের সময় নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ করা না হলে পাঙাশের উৎপাদন কমে যাবে।
খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যাও।
খাওয়া
মাছের পোনা পুকুরে ছাড়ার দুই দিন পর সম্পূরক খাদ্য দিতে হবে।
মাছের খাবারের পরিমাণ নির্ভর করে বয়স এবং শরীরের ওজনের উপর।
খাবার একবারে না দিয়ে তিন ভাগে দিতে হবে।
প্রথম ১০ দিনের জন্য দেওয়া খাবারের পরিমাণ পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে কিছুটা বাড়াতে হবে।
তবে ধীরে ধীরে এভাবে বাড়াতে হবে।
তবে মাছ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার সাথে সাথে আবার ধীরে ধীরে খাবার কমিয়ে দিতে হবে।
সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যে মাছ যদি সম্পূর্ণ খাদ্য সঠিকভাবে গ্রহণ না করে তবে খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে।
কোনও অস্বাভাবিক আচরণ নজর রাখুন।
সেদ্ধ মটর, বাদাম অবশ্যই খাবারে রাখতে হবে।
এ ছাড়া বাজারে সাধারণ মাছের খাবার কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলোও দিতে পারেন।
এদের খাদ্যে পশুর মাংস থাকা উচিৎ।
এ অবস্থায় মাছের শুকনো গুঁড়া, গবাদি পশুর রক্ত, মুরগির ছাল, পালক ইত্যাদি দিতে হবে।
এছাড়া শামুক, ঝিনুক, গবাদি পশুর হাড় ছোট ছোট টুকরো করে একত্রে মিশিয়ে বলের আকারে পুকুরে ফেলতে পারেন।
No comments:
Post a Comment