কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে পুলিশ-প্রশাসনকে ধমক! বিএসএফের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন মমতার - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 4 May 2023

কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে পুলিশ-প্রশাসনকে ধমক! বিএসএফের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন মমতার


কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে পুলিশ-প্রশাসনকে ধমক! বিএসএফের বিরুদ্ধেও প্রশ্ন মমতার



নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৪ মে, কলকাতা: কালিয়াগঞ্জে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি বিএসএফের ভূমিকা খতিয়ে দেখার ইঙ্গিতও দেন তিনি। রাধিকাপুরে বিজেপি কর্মী মৃত্যুঞ্জয় বর্মন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সেই গ্রামে বিএসএফের প্রভাব কতটা তা জানতে তদন্ত প্রয়োজন বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও কালিয়াগঞ্জ কালিয়াচকের মত হিংসার ঘটনা নেপথে দিল্লীর বড়সড় ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও দাবী করেন তিনি। সেই সঙ্গে কালিয়াগঞ্জ এ নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। 


এদিন মালদায় প্রশাসনিক সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানেই উঠে আসে কালিয়াগঞ্জ প্রসঙ্গ। এদিন ঘুরিয়ে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় কার্যত বিএসএফকে কাঠগড়ায় তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার প্রশ্ন 'গুলিটা কে চালালো?' এরপরই তিনি বলেন, "আমি তো শুনেছি বিএসএফ নাকি গ্রামটা নিয়ন্ত্রণ করে! পুলিশের কাছে কোন খবর আছে? এটা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।"


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বিএসএফ তো এখন ৫০ কিলোমিটার এর ভিতরে ঢুকে গেছে, অনেক অত্যাচারও করে, অনেকে নাকি মারাও গেছে! গুলিটা কে চালালো, কোথা থেকে চলল, এটা তদন্ত হওয়া দরকার আছে।" মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের জবাবে জেলার এক আধিকারিক জানান, রাধিকাপুর গ্রাম সীমান্ত এলাকার। আর এতেই খুব মুখ্যমন্ত্রী তিনি বলেন," তার মানে তোমাদের কাছে যে তথ্য নেই, সে তথ্য আমার কাছে আছে। তোমাকে কেউ গালি দিচ্ছে আর তুমি চুপ করে শুনছো।" এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাণীও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, "রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব কেউটে সাপকে বলেছিলেন, ওরে তোকে কামড় দিতে বারণ করেছি ফোঁস করতে নয়।' আমি গুলি চালাতে বলছি না কিন্তু আপনার কাছে আইন আছে সেটাই অনেক।"


এছাড়াও তিনি বলেন, "আপনার এলাকায় ঢুকে যদি বিএসএফ কোনও অত্যাচার করে, এফআইআর করে স্টেট অ্যাকশন, কোনও অত্যাচার আমি সহ্য করব না।"


এর পাশাপাশি এদিন কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "এখন কিন্তু সেই যুগ নেই যে, একটা ঘটনা ঘটার চার ঘন্টা পর পুলিশ যাবে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে যেতে হবে। অপেক্ষা করার কোনও জায়গা নেই।" কালিয়াগঞ্জের ঘটনাটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মানুষকে জানাতে এত সময় লাগল কেন? প্রশ্ন করেন তিনি। 


মমতা বলেন, "সঙ্গে সঙ্গে কি ঘটেছে জানিয়ে দিলে মিডিয়া ট্রায়াল করতে পারে না। পুলিশকে গিয়ে দুমদাম মেরে আসছে, বিডিও অফিসে ভাঙচুর করছে এত সাহস হয় কোথা থেকে!" তিনি বলেন, "পুলিশ ভুল করলে বলতে পারে বিডিও অফিসে কমপ্লেন জানাতে পারে, কিন্তু পুলিশের গায়ে ঊর্ধি আছে সেটা মনে রাখতে হবে।"


সেই সঙ্গে তার প্রশ্ন, "কালিয়াগঞ্জে প্রথমে কনস্টেবলকে কেন পাঠিয়েছে? আইসি কেন যায়নি? আইসি বসেছিল কেন?" তিনি বলেন, "আইসি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে দেহটা সসম্মানে আনতে পারত। দরকার হলে কিছু সাদা কাপড় রাখতে হবে।" পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় আইবি স্ট্রং রাখতে হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।


এদিন মুখ্যমন্ত্রী দাবী করেন, কালিয়াগঞ্জ কালিয়াচকের মত জায়গায় ইচ্ছে করে হিংসা ছড়ানো হচ্ছে। তিনি বলেন, "এটা ইচ্ছে করে দেখানো হচ্ছে। কারণ ২০-২৫ জনের একটা মিটিং হয়েছে, দিল্লী থেকে তারা এসেছিল। তারা বলেছে জাতিগত দাঙ্গা লাগাও। শুধু হিন্দু-মুসলিম নয়, রাজবংশী-বাঙালি, কুড়মি-আদিবাসীদের মধ্যে লাগাও। কয়েকটা মুসলিম ছেলেকে ডেকে টাকাও দেওয়া হচ্ছে, যে তুই দাঙ্গা লাগিয়ে দিয়ে চলে যা। হয়তো সে করতেও চায় না। কিন্তু অনেকে আবার টাকা চায়। এগুলো নজরে রাখতে হবে।"


মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "কোনও হিন্দু-মুসলিম-রাজবংশী-মতুয়া- দাঙ্গা কেউ চায় না। দাঙ্গা চায় কিছু বজ্জাত রাজনৈতিক নেতা আর কিছু টিভি চ্যানেল।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad