নবজাতক শিশুদের পাতলা মল বন্ধ করার কিছু ঘরোয়া প্রতিকার - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Thursday 4 May 2023

নবজাতক শিশুদের পাতলা মল বন্ধ করার কিছু ঘরোয়া প্রতিকার


নবজাতক শিশুদের পাতলা মল বন্ধ করার কিছু ঘরোয়া প্রতিকার

প্রেসকার্ড নিউজ, হেল্থ ডেস্ক, ৪ মে: পাতলা মল নবজাতক শিশুদের একটি সাধারণ অভিযোগ, তবে এটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে একটি গুরুতর অবস্থার কারণ হতে পারে। শিশুদের পাতলা মল হওয়ার সমস্যাকে ডায়রিয়াও বলা যেতে পারে। আমরা আপনাকে প্রাথমিক চিকিৎসার ভিত্তিতে ডায়রিয়া বন্ধ করার কিছু ঘরোয়া প্রতিকার বলতে যাচ্ছি, যার মাধ্যমে আপনি আপনার শিশুর ডায়রিয়ার চিকিৎসা করতে পারবেন। যদি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ডায়রিয়া হয় তবে তিনি এটি একটি সীমা পর্যন্ত সহ্য করতে পারেন। তবে শিশুরা পারে না, কারণ তাদের শরীর এখনও  সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হয়নি।

শিশুদের পাতলা মল হওয়ার  কারণ -

রোটাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পাতলা মল হয়। এই ভাইরাস বড়োদের এবং ছোট শিশুদের অন্ত্রে আক্রমণ করে অন্ত্রের অভ্যন্তরীণ স্তরগুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এবং স্তরটির ক্ষতির কারণে তরল বেরোতে শুরু করে।

শিশুদের পাতলা মল সাধারণতঃ হয়ে থাকে -

ফর্মুলা দুধ থেকে,

তীব্র সর্দি-ফ্লু-এর কারণে,

অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে 

এলার্জি হলে,

খাবারে বা পাত্রে অপরিচ্ছন্নতার কারণে,

খাবার বাসি ও খারাপ হলে।

শিশুদের পাতলা মল বেশিরভাগই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি মনোযোগ না দেওয়ার কারণে হয়। কারণ শিশুরা যে কোনও জায়গায় পড়ে থাকা জিনিস মুখে দেয়। এই কারণে তাদের পাতলা মল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।  

শিশুদের পাতলা মল বন্ধ করতে নিম্নলিখিত দেশীয় ঘরোয়া প্রতিকারগুলি গ্রহণ করতে পারেন :

জায়ফল -

জায়ফলের এক-চতুর্থাংশ চা চামচ গুঁড়ো হালকা গরম জলের  সাথে শিশুকে দিনে দুই থেকে চারবার দিন। এটি আপনার শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে অনেক কাজে দেবে।

বেলগিরি -

দিনে তিন থেকে চার বার বেলের পাল্প খাওয়ালে ছোট শিশুর পাতলা মলে আরাম পাওয়া যায়।  বিশেষ করে গ্রীষ্মের মরসুমে বা গরমের কারণে শিশুর ডায়রিয়া হলে এই প্রতিকার বেশি কার্যকর।

ডালিমের খোসা -

ডালিমের খোসার গুঁড়ো তৈরি করুন এবং যখনই শিশুর ডায়রিয়া হবে, তখন এই গুঁড়োতে মধু মিশিয়ে তাকে চাটতে দিন।  এই সহজ পদ্ধতিটি ডায়রিয়া বন্ধ করতে খুবই সহায়ক।

এর পাশাপাশি দিনে তিন থেকে চারবার শিশুকে ডালিমের রস দিন। এটি ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকিও কমাবে এবং দুর্বলতা হতে দেবে না। এটি শিশুদের মধ্যে ডায়রিয়া বন্ধ করার সবচেয়ে প্রভাবি এবং কার্যকর উপায়।

মৌরি -

পাতলা মলের সাথে অল্প অল্প শক্ত মল হলে কাঁচা মৌরি ৩ গ্রাম ও ভাজা মৌরি ৩ গ্রাম নিয়ে পিষে তাতে মিশ্রি মিশিয়ে খাওয়ালেও দ্রুত মল বন্ধ হয়। এক গ্লাস জলে মৌরি গুঁড়ো এবং বেলগিরি উভয়ই মিশিয়ে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে শিশুকে পান করাতে থাকুন।

লস্যি -

এক গ্লাস বাটারমিল্কে বা লস্যিতে ১২ গ্রাম মধু মিশিয়ে দিনে তিনবার পান করান। লুজ মোশন প্রতিরোধে এটি খুবই উপকারী।  শিশু খুব ছোট হলে শীতকালে লস্যি দেবেন না, যদি দিতেই হয় তবে দিনের বেলা রোদের সময় দিন।

আপেল -

শিশুকে আপেল সিডার ভিনিগার দিন। এটি পাকস্থলীকে শীতলতা দেয় এবং ডায়রিয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাও রাখে। আপেল সিডার ভিনিগার জলে মিশিয়ে দিন। কারণ ভিনিগার অ্যাসিডিক, জলে না মেশালে পাকস্থলীর ক্ষতি হতে পারে।

কলা -

কলা এবং ভিনিগার উভয়েই পেকটিন পাওয়া যায়। এটি অন্ত্রের আস্তরণকে শক্তিশালী করে, যা ডায়রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়। তাই আপনার শিশুকে আপেল সিডার ভিনিগারের সাথে কলা খাওয়ান।  ডায়রিয়া বন্ধ করতে ভারতে কলা বহু আগে থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

দুধ -

আধা গ্লাস কাঁচা দুধ নিয়ে তাতে একটি লেবুর রস মিশিয়ে শিশুকে দিন। মনে রাখবেন যে দুধ ফেটে যাওয়ার আগেই এটি খাওয়াতে হবে।

লেবু -

এক গ্লাস জলে একটি লেবুর রস মিশিয়ে স্বাদ অনুযায়ী লবণ ও চিনি যোগ করে পান করালেও  আরাম পাওয়া যাবে।

মেথি -

মেথি বীজ জলে ভিজিয়ে রাখুন। এটি সম্পূর্ণ ভিজে গেলে দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চারবার খাওয়ান। শিশু একবারে যতটা দই এবং মেথির বীজ নিতে পারে ততটুকুই দিন।

প্রচুর জল পান করান -

ডায়রিয়ার কারণে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, এর প্রধান কারণ শরীরে জলের  অভাব। শিশুদের যতটা সম্ভব জল দিন। কারণ শিশু যত বেশি জল পান করবে তত তাড়াতাড়ি সে সুস্থ হয়ে উঠবে। বারবার পাতলা মল হওয়ার কারণে শিশুদের শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয়।

চিনির জল পান করান -

ডায়রিয়ার কারণে শরীরে সোডিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়।  এর থেকে বাঁচতে এক গ্লাস জলে সামান্য চিনি ও সামান্য লবণ মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চারবার শিশুকে পান করান।

ওআরএস -

যদি আপনার শিশু স্তন্যপান করে, তবে পাতলা মলের সময়ও স্তন্যপান করানো ভালো। সেই সাথে তাকে O.R.S. গ্লুকোজ ইত্যাদি দিতে থাকুন যাতে তার জলশূন্যতার ঝুঁকি না থাকে।  আপনার শিশু যদি ফলের রস পান করে, তবে তাকে ডায়রিয়ার সময় বেশি করে ফলের রস দিন।

যদি এরপরও শিশুর সমস্যা হয়, তবে আপনার ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিৎ। কারণ নবজাতকরা তাদের অসুবিধাগুলো আমাদের  বলতে পারে না। তাই আরাম না পেলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।

বি.দ্র: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ জ্ঞান ও ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে দেওয়া। প্রেসকার্ড নিউজ এটি নিশ্চিত করে না। কোনও নতুন কিছু শুরুর আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞর পরামর্শ অবশ্যই নিন।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad