বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর বাড়িতে আয়কর হানা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর দিনাজপুর, ০৩ মে: রায়গঞ্জের বিধায়ক তথা পিএসি চেয়ারম্যান কৃষ্ণ কল্যাণীর বাড়িতে আয়কর হানা। বুধবার সকালে আয়কর দফতরের আধিকারিকরা বিধায়কের বাড়িতে যান এবং অফিসেও যান একটি দল। সূত্রের খবর, বাড়ির ভেতর ঢুকে পরিবারের সব সদস্যের মোবাইল ফোন নিয়ে নেওয়া হয়েছে, এমনকি বিধায়কের ফোনও নিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাইরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিন সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় বিধায়কের বাড়ি-অফিস। নিয়ে নেওয়া হয় বিধায়কের ফোনও। আয়কর দফতর সূত্রে খবর , কৃষ্ণ কল্যাণীর তিনটি ঠিকানায় একযোগে চলছে তল্লাশি। আয় বহির্ভূত সম্পত্তি এবং আয়ের চেয়ে কর অনেক কম দেওয়ার অভিযোগ বিধায়কের বিরুদ্ধে। আরও জানা গিয়েছে, ৩০-৪০ জন আধিকারিকরা ম্যারাথন তল্লাশি চালাচ্ছেন। বাইরে থেকে বাড়ির গেট সিল করে দেওয়া হয়েছে বাড়ির ভিতর কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
কৃষ্ণ কল্যাণী খাতায়-কলমে বিজেপি বিধায়ক হলেও তিনি রয়েছেন তৃণমূলে। ২০১১ সালে বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ বিধানসভা থেকে জয়ী হন তিনি, পরে তৃণমূলে যোগ দেন। আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা বলছেন তাদের কাছে খবর ছিল যে কৃষ্ণ কল্যাণীর আয় বহির্ভূত সম্পত্তি রয়েছে। সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরে যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা হয়েছে সেখানে কিছু অসংগতি রয়েছে।
বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানীর আপ্ত সহায়ক সৌরভ দাস বলেন, "কর্মীদের মুখে শুনতে পারি সেন্ট্রাল টিম নিয়ে ওনারা এসেছেন। সম্ভবত ইডি আধিকারিকরা এই অভিযান চালাচ্ছেন।' তার অভিযোগ, এটা রাজনৈতিক চক্রান্ত এবং বিধায়ককে টার্গেট করা হয়েছে। তিনি বলেন, "আমাদের রায়গঞ্জের বিধায়ককে বিধানসভার ভেতরে শুভেন্দু অধিকারী যেভাবে হুমকি দিয়েছিলেন, তারই ফল আজকে দেখা যাচ্ছে।"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের এতে আতঙ্কের কিছু নেই রায়গঞ্জের বিধায়ক সব সময় মানুষের পাশে থাকেন মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন। এটা ওনাকে বদনাম করার একটা চেষ্টা। এতে কোনও লাভ হবে না।"
এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিধায়কের বাড়ির সামনে জড়ো হয়েছেন তৃণমূল নেতা ও কর্মী সমর্থকেরা। তপন নাগ, রায়গঞ্জ শহর তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ইডি হানা দিতে পারে, কিন্তু এখান থেকে বৃহদাকারে মানুষের কাজ হয়। ইডি সিবিআইকে ব্যবহার করে, ভয় দেখিয়ে এভাবে বিধায়ক অফিস বন্ধ করতে পারে না।" তিনি বলেন, রাজ্য জুড়ে যেভাবে ইডি সিবিআইকে ব্যবহার করে, বিজেপির দলদাস করে সাধারণ মানুষ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক, সাংসদ ও মেম্বারদের হয়রানি করছে, এটা তার দৃষ্টান্ত।"
উল্লেখ্য, ইডি না আয়কর দফতরের তরফে এই অভিযান চালানো হয়েছে; প্রথমদিকে এই নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। পরে ইডির তরফে জানা যায়, এই অভিযান তারা চালাননি।
No comments:
Post a Comment