"ফারাক্কা ব্যারেজের জন্য ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়নি", কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব মমতা
নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৫ মে, মুর্শিদাবাদ : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেছেন এবং নদী ভাঙ্গনের বিষয়ে সহায়তা না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। মুর্শিদাবাদে সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রাজনীতি, অশান্তি, উস্কানি ও বিদ্বেষ ছড়ানো নিয়ে যতটা উদ্বেগ ততটাই তার চিন্তা যদি প্রকৃতি নিয়ে থাকতো তাহলে এই বাংলা আরও সুন্দর হতো। সে এজেন্সির নামে লোকেদের ভয় দেখায় আমি বলব রামের নাম অপমান করবেন না। ফারাক্কা ব্যারেজের ৭০০ কোটি টাকা এখনও দেওয়া হয়নি।"
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। নদীতে জলের উচ্চতা বেড়েছে। ফারাক্কা ব্যারাজের বিষয়টি অনেক পুরনো। আমরা বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেছি। কথা হয় ফারাক্কা ব্যারেজের আধিকারিকদের সঙ্গে। আমাদের নয়, এখনও, আমরা অনেকবার কথা বলেছি, কেন তারা আমাদের সাহায্য করেনি।"
তিনি বলেন, "যখন ভারত-ফারাক্কা বাংলাদেশ জল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তখন রাজ্যের ৭০০ কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল, আজ পর্যন্ত স্থানীয় মানুষের উন্নয়নে এক পয়সাও দেওয়া হয়নি। বিজেপি সরকার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে বলবে যে তারা গ্যাস দেবে, তারা এই দেবে, তারা সেই দেবে, কিন্তু তারা কিছুই দেবে না। গতকাল সামশেরগঞ্জের জন্য ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। আমরা টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে আক্রমণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "মুর্শিদাবাদ মহান নেতাদের জন্ম দিয়েছে, কিন্তু তারা আপনার জন্য কিছুই করেনি। তুমি শুধু বঞ্চিত।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভাঙন বন্ধ করা হবে। নদীর ধারে ভেটিভার ঘাস, সমুদ্রের ধারে ম্যানগ্রোভ গাছ লাগানো হবে।"
তিনি বলেন, "মালদা-মুর্শিদাবাদ জেলার এই ভাঙন ঠেকাতে দীঘাকে একটি 'মডেল' করা হবে, কারণ দিঘার পাড় সহজে ডুবে না। নতুন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করেছেন।" তিনি বলেন, "শুধু তাই নয়, গঙ্গা ভাঙনের প্রভাব থেকে মালদা ও মুর্শিদাবাদের লক্ষাধিক মানুষকে বাঁচাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হচ্ছে।"
তিনি বলেন, "ঘাস ও ম্যানগ্রোভ ছাড়া গঙ্গার ধার থেকে পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে নতুন কোনও বাড়ি তৈরি করা যাবে না।" মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'গঙ্গার ভাঙন এখন গুরুতর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় থিম। মালদহের মতো সামশেরগঞ্জেরও অবস্থা খারাপ। একই অবস্থা ধুলিয়ানেও।'
তিনি বলেন, "সাত বছর ধরে টাকা দেয়নি কেন্দ্র। ফারাক্কার জল বন্টন চুক্তি থেকে ৭০০ কোটি টাকা পাওয়া যাবে। সেই টাকাও দেয়নি কেন্দ্র।সিবিআই ও ইডি-র নামে লোকেদের ভয় দেখানোর জন্যই কেন্দ্র সরকার। সিবিআই যদি বলে যে কিছু পাওয়া যায়নি, তাহলে বলা হয় এটাকে বিস্ফোরণ কর, মানহানি কর।"
সকালে সামশেরগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর তিনি প্রশাসনিক বৈঠকে অংশ নেন এবং ইজারা বিতরণ করেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী মোট ৮৬ জনের হাতে প্যাটাস তুলে দেন।
তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবারই মালদা-মুর্শিদাবাদে একটি প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে। আজ নিজ চোখে সামশেরগঞ্জ দেখতে এসেছি। লালগোলা, ভগবানগোলা, ধুলিয়ান, সুতি বহুবার গেছি। এদিন ফের ফারাক্কা ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার মুখ্যমন্ত্রী।"
No comments:
Post a Comment