পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়! বাসা বানিয়ে দিচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক! - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Wednesday, 3 May 2023

পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়! বাসা বানিয়ে দিচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক!


পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়! বাসা বানিয়ে দিচ্ছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক! 



নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব বর্ধমান, ০৩ মে: 'গাছপালা আর আগের মতো নেই, ফলে পাখিও কমে গেছে', এই অভিযোগ পূর্ব বর্ধমানবাসীর অনেক দিন ধরেই। তবু দামোদর সন্নিহিত কাঞ্চননগর এলাকায় এখনও কিছু গাছ আছে। আগের প্রজন্ম যেমন পথেঘাটে ময়ূর চরে বেড়াতে দেখেছিল তা এখন দেখা না গেলেও, সকাল-সন্ধ্যে পাখির কলতান এখানকার মানুষকে আনন্দ দেয়। অনেকরকম পাখির মধ্যে পেঁচাও রয়েছে প্রচুর।


কাঞ্চননগরে দীননাথ দাস উচ্চ বিদ্যালয় চত্ত্বরে যে বিশাল বটগাছটি আছে সেটি অসংখ্য পাখির আশ্রয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. সুভাষচন্দ্র দত্ত আলাদাভাবে এই গাছে কৃত্রিমভাবে তৈরি চল্লিশটি পাখির বাসা করিয়ে দেন, যাতে পাখিরা খাবার সংরক্ষণে ও প্রজননে স্বাচ্ছন্দ্য পায়। এগুলিতে রয়েছে বহু পেঁচাও। 


সম্প্রতি, ভোরে একটি পেঁচাশাবক উঁচু বাসা থেকে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর সকালে বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিভাগের এক শিক্ষিকার চোখে পড়লে তিনি পেঁচার ছানাটিকে শুশ্রূষার পর লাইব্রেরিতে রাখেন। পরে প্রধান শিক্ষক ড. দত্ত এসে বর্ধমান অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটিকে খবর দেন। তাদের পক্ষে অর্ণব দাস ও সঞ্জয় রায় এসে পাখিটিকে তার বাসায় রাখার উদ্যোগ নেন।


ড. দত্ত বলেন, 'চিন্তা হচ্ছিল এতগুলো বাসার মধ্যে ওর বাসা আমরা খুঁজে পাব কীভাবে।ষ! কিন্তু শিশু-পেঁচাটিকে গাছের কাছে আনামাত্র ওর মা এবং আরও একটি শিশু-পেঁচা চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেয়, বাসা থেকে উঁকিঝুঁকি মারতে থাকে। তখন আমরা বাসাটিকে চিহ্নিত করতে পারি।'


তিনি জানান, এবার গাছে ওঠার পালা। উঁচু মই এনে চড়ার তোড়জোড় শুরু হয়। ওয়েলফেয়ার সোসাইটির অর্ণব এই জাতীয় কাজ আগেও করেছেন। তাঁর দক্ষতায় এবং শিক্ষক অনুপ দত্ত ও বিদ্যালয়কর্মী রাধেশ ও বিশ্বজিতের সাহায্যে শিশু-পেঁচাটির পুনর্বাসন ঠিকমতো হয়।


দেশে-বিদেশে বহু জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধের রচয়িতা ড. সুভাষচন্দ্র দত্ত বলেন, 'এটি হুতুম পেঁচা। গত সাত বছর ধরে বিদ্যালয়ে যে বৃহদাকার পেঁচাগুলি আশ্রয় নিয়ে আছে সেগুলি লক্ষ্মীপেঁচা। এভাবে একাধিক প্রজাতির পেঁচা বিদ্যালয় পরিবেশে সুস্থভাবে জীবন কাটাচ্ছে ও বংশবৃদ্ধি করছে। এখানে তাদের খাদ্যের অভাব নেই।'


'কীটপতঙ্গ ও ইঁদুরের মতো ছোট প্রাণী খেয়ে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রেখে এই পেঁচারা স্থানীয় পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখছে। লক্ষ্মীর এই বাহনদের এলাকাবাসীর কাছে ধন্যবাদ প্রাপ্য', বলেই তাঁর মত।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad