তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি, এলাকায় চাপা উত্তেজনা
নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ০৮ পরগনা: তৃণমূল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার অভিযোগ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায়। গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা তোয়েব আলি মণ্ডল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্তোষপুর থেকে বাইক চালিয়ে ঘুরিগাছি গ্রামের বাড়ি ফেরার পথে মথুরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তৃণমূল নেতা তোয়েব আলি মণ্ডল। অভিযোগ, তাকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। তাঁর ডান হাতে গুলি লাগে। স্থানীয়রাই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বারাসাতের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। কে বা কারা গুলি চালায়, তা প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।
তৃণমূল কর্মী মোস্তাক আহমেদ মণ্ডল জানান, জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করে, কে বা কারা গুলি করেছে তা স্পষ্ট নয়। চাষবাসের পাশাপাশি তৃণমূল দল করতেন তোয়েব। দলে কোনও পদে না থাকলেও সক্রিয় তৃণমূল কর্মী ছিলেন। কি কারণে এই গুলি চলল বা কারা গুলি চালাল তা তোয়েব ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। হাতে গুলি লেগেছে। তাঁর কথায়, 'মানুষ-মানুষের শত্রু তো থাকতেই পারে, তবে কার সাথে শত্রুতা তা জানা নেই। রাজনীতি করলে তার শত্রু থাকবেই।' এলাকায় বিরোধী বলে কেউ নেই। নিজেদের মধ্যেই অর্থাৎ দলের কেউ মারলো কিনা তা তোয়েব ছাড়া কেউ বলতে পারবে না বলেও তিনি জানান।
ঘটনার পরই ঘটনাস্থলে যায় আমডাঙা থানার পুলিশ সহ পুলিশ আধিকারিকরা। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ন'টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। এলাকা দিয়ে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন তোয়েব। সেইসময় অপর এক বাইক এসে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। অপারেশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় বারাসাত থেকে কলকাতায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ঘটনার পর থেকেই চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। কি কারণে এই গুলি, কে বা কারাগুলি চালালো গোটা বিষয়ে তদন্ত করে দিচ্ছে আমডাঙা থানার পুলিশ।
অপরদিকে গুলির ঘটনার সমসাময়িক সময়ে ঘটনাস্থল থেকে সাত কিমি দূরে বোমা বিষ্ফোরণে তিনজন আহত হয়। তাদের বারাসত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের দাবী বাড়ির সামনে রাস্তায় তারা দাঁড়িয়েছিলেন কেউ বা কারা বোমা মেরে পালিয়ে যায়। তোয়েবকে গুলি করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বোমাবাজি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। তবে দুটি ঘটনার মধ্যে কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে আমডাঙা থানার পুলিশ। এলাকায় চলছে পুলিশি টহল।
এদিকে রাতের ঘটনার পর থেকে চাপা উত্তেজনা এলাকায়। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তোয়েব আলি মণ্ডলের ভাইয়ের দাবী, গতকাল রাতে তার দাদার ওপর গুলি চালানোর ঘটনার পরেই এলাকায় বোমের শব্দ শুনতে পায়। তার অভিযোগ, তৃণমূল নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে আনন্দে বোম ফাটিয়েছে অপর গোষ্ঠী, এমনটাই অভিযোগ। যদিও বিজেপির অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই গতকালের এই গুলি চালানোর ঘটনা।
যদিও কে বা কারা গুলি চালাল, কি বিষয়ের জন্য গুলি চালালো সে বিষয়ে জানা নেই। পুলিশের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান স্থানীয় বিধায়ক রফিকুর রহমান। তবে আমডাঙ্গা থানার প্রাক্তন আইসি-র মধ্যে বেশ কিছু অসামাজিক কার্যকলাপ তৈরি হয়েছিল আমডাঙা জুড়ে, সেই রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি নতুন আইসি আসার পরও, দাবী বিধায়ক রফিকুর রহমানের। সবমিলিয়ে পঞ্চায়েতে নির্বাচনের আগে ফের উত্তপ্ত আমডাঙা, আতঙ্কে সাধারণ মানুষ।
No comments:
Post a Comment