খবরের জের! কন্যাশ্রীর টাকা ফেরত পেলেন ছাত্রী
নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১৬ মে: সংবাদমাধ্যমের খবরের জের, কন্যাশ্রীর টাকা ফেরত পেলেন ছাত্রী। ব্লক দপ্তরে ডেকে মৎস্য ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ফেরত দেওয়া হল টাকা। ব্লক প্রশাসন ও সংবাদমাধ্যমকে ধন্যবাদ ছাত্রীর।
মুখ্যমন্ত্রীর সাধের কন্যাশ্রী প্রকল্পের ছাত্রীর টাকা ঢুকে গিয়েছিল মৎস্য ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে। সেই টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন মৎস্য ব্যবসায়ী। সেই খবর সম্প্রচারিত হয় সংবাদ মাধ্যমে। শোরগোল পড়ে যায় জেলা জুড়ে। তারপর খবরের জেরে তৎপর প্রশাসন। দিন দুয়েকের মধ্যেই কন্যাশ্রীর টাকা ফেরত পেলেন ছাত্রী। সংবাদ মাধ্যম এবং ব্লক প্রশাসনকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন ওই ছাত্রীর। 'খবর না হলে প্রশাসনের টনক নড়ে না', খোঁচা বিরোধীদের। প্রশাসন তৎপর, পাল্টা তৃণমূল।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরদমনগরের বাসিন্দা রিকিতা চৌধুরী। এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছেন রিকিতা। দৌলতপুর হাই স্কুলের ছাত্রী। বাবা অনাদি চৌধুরী কৃষিকাজ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য আবেদন করেছিলেন রিকিতা। বঙ্গীয় গ্রামীন বিকাশ ব্যাংকের খিদিরপুর শাখাতে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার। কিন্তু কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে না ঢুকে তালসুর গ্রামের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী দেবেন মহালদারের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যায়।
ঘটনা জানতে পারার পর দেবেন মহালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিকিতার পরিবার। প্রথমে তিনি টাকা ফেরত দিতে চাইলেও পরবর্তীতে টাকা দিতে চাইলেন না বলে অভিযোগ উঠে। তারপরে ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের দারস্থ হয় রিকিতা। এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে রিকিতা। এক জনের কন্যাশ্রী টাকা কীভাবে অন্যজনের অ্যাকাউন্টে গেল, তা নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। দালাল চক্র চলছে অভিযোগ তুলে ছিল বিরোধীরা। সেই খবর সম্প্রচারিত হয় সংবাদ মাধ্যমে। আর খবর সম্প্রচারের পরেই হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক কার্যালয়ে ডেকে রিকিতাকে তার প্রাপ্য টাকা দেওয়া হল। বিডিও বিজয় গিরির তত্ত্বাবধানে ওই মৎস্য ব্যবসায়ী টাকা ফেরত দেয় রিকিতাকে। কন্যাশ্রীর টাকা পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন রিকিতা এবং তার পরিবার। তারা ধন্যবাদ জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম এবং বিডিওকে।
ছাত্রী রিকিতা চৌধুরী বলেন, 'সংবাদমাধ্যম এবং প্রশাসনকে ধন্যবাদ। এই টাকাটা আমার অনেক কাজে দেবে। নার্সিং ট্রেনিং এবং কলেজে ভর্তি হব। আমার বাবার তো তেমন সামর্থ্য নেই।'
দৌলতপুর বিদ্যালয়ের পার্শ্বশিক্ষক সুরজিৎ রায় বলেন, 'কোনও একটা সমস্যা হয়েছিল। প্রশাসন খতিয়ে দেখে সেই সমস্যার সমাধান করল। সেই মেয়েটা টাকা পেয়ে গেল। আর কোনও সমস্যা থাকল না।'
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, "প্রশাসন সব ক্ষেত্রে সক্রিয় রয়েছে। বিশ্ববন্দিত কন্যাশ্রী প্রকল্প মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। এখানে কোনও বেনিয়ম হবে না। সমস্যা হয়েছিল প্রশাসন সমাধান করে দিয়েছে।"
জেলা বিজেপি সাংগঠনিক কমিটি সদস্য কিষান কেডিয়া বলেন, "এই রাজ্যে খবর না হলে প্রশাসনের টনক নড়ে না। এখানে খবর হল তাই প্রশাসনের টনক নড়েছে। সংবাদ মাধ্যম নিজের দায়িত্ব পালন করেছে। তদন্ত করলে অনেক ঘটনা সামনে আসবে। প্রশাসনকে বলব কন্যাশ্রী দপ্তরে তদন্ত করার জন্য।"
No comments:
Post a Comment