কন্যাশ্রীর টাকা মাছ ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে! তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Friday 12 May 2023

কন্যাশ্রীর টাকা মাছ ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে! তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির


কন্যাশ্রীর টাকা মাছ ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে! তৃণমূলকে খোঁচা বিজেপির 




নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ১২মে: কন্যাশ্রীর টাকা মাছ ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে। প্রকৃত উপভোক্তা টাকা ফেরত চাইলে টাকা দিতে অস্বীকার মাছ ব্যবসায়ীর। ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল এলাকায়। শুক্রবার থানা এবং ব্লক প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের ছাত্রীর। অভিযোগ পেতেই হতবাক বিডিও। মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তৃণমূলের মদতে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে অভিযোগ বিজেপির। 'কীভাবে ভুল হল সেটা প্রশাসনকে খতিয়ে দেখতে বলব', সাফাই তৃণমূলের। নিজের প্রাপ্য কন্যাশ্রী টাকার দাবীতে সরব হয়েছে ওই ছাত্রী। 


মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হরদমনগরের বাসিন্দা রিকিতা চৌধুরী। এই বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে রিকিতা। দৌলতপুর হাই স্কুলের ছাত্রী। বাবা অনাদি চৌধুরী কৃষিকাজ করেন। দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকার জন্য আবেদন করেছিলেন রিকিতা। বঙ্গীয় গ্রামীন বিকাশ ব্যাংকের খিদিরপুর শাখাতে অ্যাকাউন্ট রয়েছে তার। কিন্তু কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্টে না ঢুকে সেই টাকা তালসুর গ্রামের বাসিন্দা মাছ ব্যবসায়ী দেবেন মহালদারের অ্যাকাউন্টে ঢুকে গিয়েছে বলে অভিযোগ।


ঘটনা জানার পর দেবেন মহালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিকিতার পরিবার। প্রথমে তিনি টাকা ফেরত দিয়ে দিতে চাইলেও পরবর্তীতে টাকা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। তারপরে ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন রিকিতা। এই মর্মে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। এক জনের কন্যাশ্রীর টাকা কীভাবে অন্যজনের অ্যাকাউন্টে গেল, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। 


রিকিতার স্বপ্ন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর নার্সিং ট্রেনিংয়ে যাওয়ার। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে কন্যাশ্রীর ২৫ হাজার টাকা বড় ভরসা। কখন তাদের প্রাপ্য টাকা তারা পাবে সেই অপেক্ষায় বসে রয়েছে রিকিতা এবং তার পরিবার। এদিকে সমগ্র ঘটনা সামনে আসতেই সুর চড়িয়েছে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ, এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। এটা কোন ভুল না এর পেছনে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের দাবী, কোনও ভুল হলে প্রশাসন সেটা খতিয়ে দেখবে। 


বিশ্ববন্দিত কন্যাশ্রী প্রকল্প, মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প।হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক বিজয় গিরি জানিয়েছেন, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে সমস্ত ঘটনা। যে প্রকৃত উপভোক্তা সে ঠিক টাকা পাবে।


অভিযোগকারী ছাত্রী রিকিতা চৌধুরী বলেন, 'কন্যাশ্রীর টাকা একজন ছেলের অ্যাকাউন্টে কীভাবে ঢুকে গেল। সেটা নিয়ে যাতে তদন্ত করা হয় সেই জন্য অভিযোগ জানিয়েছি। আমি আমার হকের টাকার দাবী করছি।'


ছাত্রী রিকিতার বাবা অনাদি চৌধুরী বলেন, 'আমি কৃষি কাজ করি। পরিবারে তিন সন্তান। গরীব মানুষ আমরা। আমার মেয়ের টাকাটা যাতে আমার মেয়ে পায়, আমি সেটাই দাবী করছি।'


দৌলতপুর হাই স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক সুরজিৎ রায় বলেন, 'বিদ্যালয় থেকে কোনও ভুল তো হয়নি। হয়তো কোথাও একটা ভুল হয়েছে। এক্ষেত্রে যার ন্যায্য টাকা সেই যাতে পায়।'


মালদা জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক জম্মু রহমান বলেন, 'প্রশাসনকে বলব কোথায় ভুল হয়েছে সেটা খতিয়ে দেখতে। এটা আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প। এখানে যার ন্যায্য পাওনা, সেই পাবে।'


উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, 'এর আগেও এই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। এটা কোনও ভুল না। তৃণমূলের মদতে দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে। যেখানে প্রকৃত উপভোক্তা বঞ্চিত হচ্ছে।'


প্রসঙ্গত আবাস যোজনার টাকা হোক বা ১০০ দিনের কাজের টাকা প্রকৃত উপভোক্তাদের বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ বহুবার সামনে এসেছে। একজনের টাকা চলে গিয়েছে অন্যজনের অ্যাকাউন্টে। এবার কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়েও একই অভিযোগ। অথচ এই প্রকল্প রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প, আন্তর্জাতিক মঞ্চে যে প্রকল্প পুরষ্কার লাভ করেছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পর প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad