সরকারি জমি দখল-মুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান! তরজায় তৃণমূল-বিজেপি - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 6 May 2023

সরকারি জমি দখল-মুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান! তরজায় তৃণমূল-বিজেপি


সরকারি জমি দখল-মুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান! তরজায় তৃণমূল-বিজেপি




নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা, ০৬ মে: সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান, উচ্ছেদ করা হল ২০ থেকে ২৫ টি পরিবারকে। উচ্ছেদ অভিযানের পেছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত দেখছে বিজেপি, ভূমিহীনদের পাশে তৃণমূল, সদর এলাকায় ভাগাড়ের বিরোধিতায় ব্যবসায়ী সমিতি। তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতর। 


সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে পুলিশের যৌথ অভিযান। সরকারি জমি থেকে উচ্ছেদ করা হল ২০-২৫ টি পরিবারকে। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় হলদিবাড়ি মোড়ে সরকারি জমি দখলমুক্ত করতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালায় হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক ভিক্টর সাহা। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বিডিও অনির্বান বসু, হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি দেওদূত গজমের। 


ওই জমিতে বসবাসকারী ২০ থেকে ২৫ টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। তাদের মধ্যেই দুলাল সিংহ নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তিনি ২০১৩ সালে টাকার বিনিময়ে ওই জমি কিনেছিলেন। তার কাছে সেই দলিল রয়েছে। সূত্রের খবর, এখানে প্রত্যেক পরিবারই টাকার বিনিময়ে জমি কিনে বসবাস করছিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে কারা টাকার বিনিময়ে সরকারি জমি বিক্রি করেছিল? কেনই বা সেই সময় পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন? 


এদিকে জমি মাফিয়াদের সঙ্গে শাসকদল এবং প্রশাসনের আঁতাতের অভিযোগ বিরোধীদের। বিজেপির অভিযোগ, ওই জায়গায় ভাগাড় করা হবে। তাই এই পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করল প্রশাসন। কিন্তু সদর এলাকায় ভাগাড় হতে দেবে না বিজেপি। দরকার হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। পাশাপাশি বিজেপির দাবী, এই রকম অনেক জমি তৃণমূলের নেতারা দখল করে রয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর ঘোড়া গাড়ি স্ট্যান্ডের সরকারি জমি দখল করে শপিং মল তৈরি হয়েছে। কিন্তু তখন পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন। হরিশ্চন্দ্রপুর সদর এলাকায় তৃণমূল ভোট পায় না বলে, লোক বসতির মধ্যে ভাগাড় করে পরিবেশ দূষণ করতে চাইছে। এমনটাও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছে বিজেপি। 


যদিও বিজেপির অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। তবে, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছেন, ওখানে পরিবার গুলো অনেকদিন ধরে বসবাস করত। মানবিক ভাবে তারা সেই ভূমিহীন পরিবারের পাশে রয়েছে। 


অপরদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির দাবী সদর এলাকায় যাতে ভাগাড় না হয়। নাহলে দুর্গন্ধ এবং মশা মাছির ফলে পার্শ্ববর্তী লোকজন অসুস্থ হয়ে পড়বে। আর পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে এই উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানোতর।


উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, "তৃণমূলরা একদিকে মার খাইয়ে দিল, অপরদিকে মলম লাগিয়ে দেওয়ার কাজ করছে।‌ যদি ভূমিহীনদের পাশেই থাকতো তৃণমূল কংগ্রেস তাহলে ওখানে গিয়ে বিক্ষোভ করল না কেন, যে ভাগাড় হতে দেব না।" তৃণমূলের মদতেই ভাগাড় তৈরি হচ্ছে বলে দাবী তাঁর।


অন্যদিকে, হরিশচন্দ্রপুর তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, "এখানে জমি উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এই দিন-আনা, দিন-খাওয়া লোকেরা এখানে দীর্ঘদিন বসবাস করছিলেন। কি কারণে উচ্ছেদ সেটা এখনও সঠিক জানা যায়নি, তবে এই বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কাগজ থাকলে প্রশাসন নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে।" তিনি বলেন, "আমার খুব খারাপ লাগছে এই অভিযানে। আমরা ব্যক্তিগত ও দলগত ভাবে সবসময় ভূমিহীনদের পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকব। বিজেপির কথায় আমরা কান দেই না।"

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad