শাসক সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর শাসক সভাপতির! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খোঁচা বিজেপির - press card news

Breaking

Post Top Ad

Post Top Ad

Saturday, 6 May 2023

শাসক সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর শাসক সভাপতির! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খোঁচা বিজেপির


শাসক সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর শাসক সভাপতির! গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব খোঁচা বিজেপির 



নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, ০৬ মে: পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠল অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে। ঘটনা ঘিরে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। 'এভাবেই দলটা শেষ হয়ে যাবে', খোঁচা বিজেপির। গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের অভিযোগ মানতে নারাজ শাসক দল। তুঙ্গে তরজা। ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত কাশিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দীঘা দাসপাড়া নেতাজি পল্লী এলাকার। 


স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য দূর্গা সরকারের বাড়িতে শুক্রবার রাতে স্থানীয় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মেঘনাথ দাসের নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যার ভাই তথা তৃণমূল কর্মী সঞ্জিৎ সরকারের। তিনি বলেন, গতকাল রাত একটা নাগাদ হঠাৎই মেঘনাথ দাসের বেশ কিছু অনুগামী বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং ভাঙচুর চালায়, ইট দিয়ে ভেঙে ফেলা হয় বাড়িতে রাখা টোটোর কাঁচ।" 


তিনি বলেন, "মেঘনাদ দাসের ছেলেপেলেরা এসেছিল। অ্যান্টিসোশ্যাল, তাদের কিছু জনকে আমি চিনতে পেরেছি। এসে আমার বাড়িতে টোটোর কাঁচ ভাঙচুর করেছে।" তিনি আরও বলেন, "আমার দিদি দুর্গা সরকার তৃণমূলের মেম্বার। দিদির সঙ্গে রাজনৈতিক ঝামেলা হচ্ছে মেঘনাদের। রাস্তাঘাট করতে দেয় না, রাতের বেলা হলে ছেলেপেলে নিয়ে মদ মাতাল নিয়ে বসে। গরীব মানুষদের অত্যাচার করে। তোলাবাজি, বাড়ি ভাঙচুর করা এসব ওর কাজ।" 


তিনি জানান, মেঘনাদ কাশিমপুর পঞ্চায়েতের সভাপতি এবং সদস্য। আগে পাঁচ বছর প্রধান ছিলেন। অনৈতিক কাজে বাধা দেওয়ার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে অঞ্চল সভাপতি মেঘনাদ দাসের অনুগামীরা। 


তিনি বলেন, 'নেতাদের জানানো হয়েছে, থানা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আমার দাবী মেঘনাথ দাস এবং ওর সাঙ্গোপাঙ্গোকে গ্রেফতার করা হোক।  


সঞ্জিতের স্ত্রী সাধনা সরকারও একই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, "১০-২০ ছেলে এসে উল্টোপাল্টা গালাগালি খিস্তি আমাদের টোটো  ভেঙেছে। আমি না পেলে আওয়াজ দিয়েছি তখন আমাকে উল্টোপাল্টা বলেছে। মেঘনাথ দাসের ছেলেপেলে এসেছিল। কেন আমরা জানি না। হঠাৎ এসেছে, জানালা দিয়ে ইট ছুঁড়ে মেরেছে। উদ্দেশ্য জানি না। ওদের-ওদের মধ্যে পার্টিগত ঝামেলা।"


তিনি জানান রাতে থানায় জানানোর পাশাপাশি শনিবার সকালে তার স্বামী লিখিত অভিযোগ করেছেন। সাধনা সরকার আরও বলেন, "আমরা চাইছি এগুলো বন্ধ করতে। আর এর আগের বার আমার স্বামীর গায়ে হাত তুলেছিল। এই রাস্তা নিয়ে আমার ননদের সাথে ঝামেলা হয়েছিল। সে এই রাস্তা করতে দেবে না, আমার স্বামী উপরমহলে ফোন করেছিল, সেখান থেকে ওদের উপর চাপ পড়েছিল, সেইজন্য আমার স্বামীর ওপর ওরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার স্বামীরে মারার জন্য চেষ্টা করেছিল। সেই থেকেই এবারও করেছে।" তাঁর কথায়, "এইভাবে অত্যাচার করলে আমরা কীভাবে বাড়ির মধ্যে থাকব! সামনে ভোট আসছে, আবার ভাঙচুর করবে। সেটা যেন না করে।"


যদিও গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত অঞ্চল সভাপতি মেঘনাথ দাস। তার দাবী, পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিবাদ হতে পারে, মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। সবাই আমার অনুগামী। আমার লোক কেউ গিয়ে ওর বাড়িতে হামলা করেনি।"


তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ওদের বাড়িতে বাবা ছেলের অশান্তি দীর্ঘদিন ধরে। এমনকি সঞ্জিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, রাতে মদ খেয়ে এসে ওর বাড়িতে ওর বাবা-দিদিকে প্রচণ্ড গালিগালাজ করে, নিজেই ভাংচুর করে। মানুষ জানে আর দত্তপুকুর থানাতেও এই নিয়ে ওদের ডাক করিয়েছে। পঞ্চায়েতে আমরা দু তিনবার বসেছি। এটা সম্পূর্ণ ওদের পারিপার্শ্বিক ব্যক্তিগত ব্যাপার। ভাঙচুর, ঝগড়া-অশান্তি যা কিছু করুক আমার নাম দিয়েছে।" তিনি জানান সম্প্রতি জমি নিয়ে একটি সমস্যার সমাধান তিনি করে দিয়েছিলেন সেই রাত থেকেই ওনার ওপর আজ এই মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। 


অপরদিকে গোটা বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করেছে পদ্ম শিবির। পঞ্চায়েত ভোটের আগে টিকিট নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলেই দাবী বিজেপির। আমডাঙা ৩-এর বিজেপি মণ্ডল সভাপতি জয়দেব পাল বলেন, "সারা পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি দত্তপুকুরেও হচ্ছে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল। ওখানে ১৯৫-এর তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা ওনার বাড়ি ভাঙচুর করিয়েছে ওখানকার অঞ্চল সভাপতি।"


তিনি আরও বলেন, "দলের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও কন্ট্রোল নেই। এ দলটা শেষ হতে চলেছে, এভাবেই নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল করে শেষ হবে।" তাঁর কথায়, "পঞ্চায়েতে টিকিট কে পাবে সেই বিষয় নিয়েই নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠী কোন্দল।"



No comments:

Post a Comment

Post Top Ad